বর্ধমান: তিনদিনের লাগাতার বৃষ্টির জেরে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ল রাজ্যের শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানের কৃষকরা। জলে ভাসছে মাঠে পড়ে থাকা পাকা ধান। যার ফলে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। শুধু ধান নয়, ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে সবজি চাষেরও। ক্ষতির মুখে পড়েছেন আলু চাষিরাও। সব চাষির মুখে এখন একটাই কথা, বৃষ্টিতে তাঁদের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। সরকার পাশে না দাঁড়ালে কোনও চাষি আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না। যদিও জেলার কৃষি দপ্তর বলছে, বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে যদি বৃষ্টিপাত থেমে যায় তবে ২০২১ সালের মতো তেমন ক্ষতির সম্ভবনা থাকবে না।
ধান ও আলু পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রধান অর্থকরী ফসল। সুগন্ধী ধান চাষে খ্যাতি রয়েছে এই জেলার চাষিদের। এবছর খরিফ মরশুমে জেলার ৩ লক্ষ ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। আর আলু চাষ হয়েছে প্রায় ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে। প্রতি বছরের মত এবছরও শীতের শুরুতেই জমিতে ফলন্ত পাকা ধান গাছ কাটা শুরু করেদেন চাষিরা। সব চায়ি কাটা ধান গাছ জমিথেকে তুলে নিয়ে ধান ঝাড়াই কাজ শেষ করে ফেলেছেন এমনটা নয়। জেলার রায়না, খণ্ডঘোষ, মাধবডিহি সহ আরও অনেক ব্লকে কাটা ধান গাছ আঁটি বাঁধা অবস্থা জমিতেই পড়েছিল। তার মধ্যে সুগন্ধী ধান গাছও ছিল। এই সময়ে আবার জেলার বিস্তির্ণ এলাকার চাষ জমিতে আলু বীজ বপনের কাজও চলছিল জোরকদমে। চড়া দামে সার, আলু বীজ কিনে বহু চাষি তাঁদের জমিতে আলু বীজ বপনের কাজ ইতিমধ্যেই সেরে ফেলেছেন। আলু বীজ বপনের কাজ শেষ করে ধান ঝাড়া শুরু করবেন বলে অনেক চাষিই পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছিলেন।
কিন্তু বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত নাগাড়ে চলা বৃষ্টি জেলার ধান ও আলু চাষিদের অনেকের চোখে জল এনে দিয়েছে। চাষিরা দাবি করছেন, অসময়ের এই বৃষ্টিতে তাদের প্রভূত ক্ষতি করে দিল। জমিতে পড়ে থাকা পাকা ধান সহ ধান গাছ জলে ঢুবে যাওয়ায় কার্যত তাঁদের মাথায় হাত পড়ে গিয়েছে। আলু চাষের জমিও এখন জলের তলায়। এতে শুধু আর্থিক ক্ষতিই হন না, চাষেরও প্রভূত ক্ষতি হয়েছে।
যদিও জেলার কৃষি আধিকারিক নকুলচন্দ্র মাইতি জানান, ইতিমধ্যেই জেলার ৮৫ শতাংশ জমির ধানগাছ কাটা হয়ে গিয়েছে। এদিন সন্ধ্যার পর যদি বৃষ্টিপাত থেমে যায় তবে চাষে ক্ষতির তেমন কোনও সম্ভাবনা নেই। ২০২১ সালের মতো দু’বার করেও আলু চাষ করতে হবে না। তবে যেহেতু জমি ভিজে থাকবে তাই আলু চাষ একটু পিছিয়ে যেতে পারে।