আলিপুরদুয়ার: শিবরাত্রির সময় যখন বক্সার জঙ্গলের (Buxa Tiger Reserve) রাস্তায় হাজার হাজার পুণ্যার্থীর ভিড়, তখনই কি সবার অলক্ষ্যে অসমে ফিরে গিয়েছিল বক্সার ‘পরিযায়ী’ বাঘ? সম্প্রতি বনকর্তাদের হাতে যে তথ্য এসেছে, তা থেকে এই প্রশ্নই উঠে আসছে। পাশাপাশি সেই কয়েক মাসে বক্সার জঙ্গলে থাকা বাঘটি (Tiger) অন্তত ছয়টি গোরু বা অন্য কোনও প্রাণী শিকার করেছিল।
নামে টাইগার রিজার্ভ হলেও দীর্ঘ বছর বাঘশূন্যই ছিল বক্সা। সম্প্রতি সংলগ্ন অসম ও ভুটানের বাঘবন থেকে বাঘেরা চলে আসছে এখানে। বক্সা টাইগার রিজার্ভের এক আধিকারিক বলেন, ২০২৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর ও ৩১ ডিসেম্বর বক্সা বাঘবনে যে বাঘটির বক্সায় ট্র্যাপ ক্যামেরায় ছবি দেখা গিয়েছে, সেই বাঘটির ছবিই অসমের (Assam) মানস টাইগার রিজার্ভের (Manas Tiger Reserve) ট্র্যাপ ক্যামেরায় ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে ধরা পড়েছিল। সেই তথ্যপ্রমাণ দপ্তরের হাতে এসেছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে প্রায় চার বছর বয়সি ওই বাঘটি মানস টাইগার রিজার্ভ থেকে বক্সায় চলে আসে। তারপর এখানেই দীর্ঘদিন ছিল। এবছর শিবরাত্রির সময়, অর্থাৎ গত মার্চ মাসের আগে পর্যন্ত বক্সার জঙ্গলে ওই বাঘের গতিবিধিও বনকর্তাদের নজরে এসেছিল। তবে শিবরাত্রির সময় জঙ্গলে ব্যাপক ভিড় হওয়ায় সে মুশকিলে পড়ে। প্রতিকূল পরিস্থিতি আঁচ করে ফের মানসে ফিরে যেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। কারণ সচরাচর বাঘেরা মানুষের থেকে দূরে থাকতেই পছন্দ করে।
তবে যেটুকু সময় সেই বুনো বক্সায় ছিল, তখন একাধিক তৃণভোজী প্রাণী মেরে খেয়েছে সে। বনকর্মীরা জঙ্গলের ভেতর অন্তত ৬টি গোরুর কঙ্কাল দেখতে পেয়েছেন। তাঁদের অনুমান, সেগুলির সবক’টিই সেই বাঘের শিকার।
এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসেও বক্সার জঙ্গলে একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘ এসেছিল। ট্র্যাপ ক্যামেরায় সেটির ছবিও পেয়েছিল বন দপ্তর। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অসম নয়, ওই বাঘটি ভুটানের টাইগার রিজার্ভ থেকে বক্সায় নেমে এসেছিল। বক্সায় বাইরে থেকে বাঘ নিয়ে আসার কথা চলছে। এই পরিস্থিতিতে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে সঙ্গিনীর খোঁজে অসম ও ভুটান থেকে বাঘেদের আনাগোনা শুরু হওয়াটা এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা বলে দাবি বনকর্তাদের। সেজন্য বাঘেদের বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলতে বাঘবনে জলাধারের সংখ্যা বাড়ানো, ঘাস লাগানো, বাঘের খাদ্য হিসেবে প্রায় হাজারখানেক হরিণ ছাড়ার মতো আয়োজন করা হচ্ছে।