কলকাতা: মতুয়ার ঠাকুরবাড়িতে অশান্তির ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ডিজিকে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠনের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। এডিজি পদমর্যাদার কোনও অফিসারকে এই তদন্তের দায়িত্ব দিতে মঙ্গলবার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। তিনি নির্দেশ দেন, অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর গ্রহণ করতে হবে পুলিশকে। পাশাপাশি যেসব মতুয়া ভক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের জামিনে মুক্তি দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। ১৮ জুলাই এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। ওই দিন সিটকে তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট দিতে হবে। রাজ্যকে হাই কোর্ট নির্দেশ দেয়, ওই মন্দির চত্বর এবং হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করতে হবে পুলিশকে।
অভিযোগ উঠেছিল, অনুমতি না নিয়ে মতুয়া মহাসংঘের মন্দিরে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পুলিশের বিরুদ্ধে ‘নিষ্ক্রিয়তা এবং অতিসক্রিয়তা’র অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। শান্তনুর অভিযোগ ছিল, মন্দিরের তরফে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি পুলিশ। উলটে কয়েকজন ভক্তের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। শান্তনুর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা দায়েরের অনুমতি দেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। এদিন সেই মামলার শুনানিতে সিট গঠনের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
প্রসঙ্গত, গত ১১ জুন উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে মতুয়াদের পীঠস্থান ঠাকুরবাড়িতে অভিষেকের সফর ঘিরে তুলকালাম বাধে। বিকেলে ঠাকুরবাড়ির পাশে একটি ছোট মন্দিরে পুজো দিয়ে গুরুচাঁদ ঠাকুরের মন্দির এবং প্রয়াত ‘বড়মা’ বীণাপাণিদেবীর ঘরে শ্রদ্ধা জানিয়ে বেরোনোয় সময়ে অভিষেক বলেন, ‘আমি চাইলে ঢুকতে ৫ মিনিট লাগবে। কিন্তু আমরা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাওতে বিশ্বাস করি না। পুজো দিতে এসেছিলাম। তিন মাস পর আবার আসব। দম থাকলে আটকে দেখিও!’ তৃণমূলের অভিযোগ ছিল, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনুর নিরাপত্তারক্ষীরা মন্দির চত্বরে ঢুকে মতুয়া ভক্ত এবং তৃণমূলের লোকজনকে মারধর করেছেন। সংঘর্ষের ঘটনার আঁচ গিয়ে পড়ে চাঁদপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালেও। তৃণমূলের অভিযোগের প্রেক্ষিতে শান্তনু পালটা দাবি করেছিলেন, অভিষেকই হাসপাতালে গুন্ডা পাঠিয়ে তাঁদের লোকজনকে মারধর করিয়েছেন। গতকাল আদলত চত্বরে দাঁড়িয়ে শান্তনু জানান, ১১ জুনের ঘটনার পিছনে রয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজিত বসুরা। অথচ পুলিশ তাঁদের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করেছে। অভিষেক বিনা অনুমতিতে ঠাকুরবাড়িতে ঢুকে ঠাকুরবাড়ির সম্মানহানি করেছেন, মতুয়াদের সম্মানহানি করেছেন বলেও জানান তিনি।