উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বধূ নির্যাতনের অভিযোগে ৪৯৮(এ)ধারার মামলায় কঠোর সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা হাইকোর্ট। দেশের শীর্ষ আদালতের একটি নির্দেশকে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল চৈতালি চট্টোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ এবং আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের সমস্ত ফৌজদারি আদালতকে সতর্ক করে জারি করলেন এক নির্দেশিকা।
৪৯৮(এ)ধারায় কোন অভিযোগ পুলিশের কাছে এলে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারির প্রয়োজনীয়তা কতটা তা নিয়ে আগে সন্তুষ্ট হতে হবে পুলিশকে, এমনটাই বলছে হাইকোর্ট।অর্থাৎ হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, ৪৯৮(এ) ধারায় বধূ নির্যাতনের অভিযোগে সুস্পষ্ট কারণ না প্রমান হলে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। আদালতের অনুমোদন থাকতে হবে গ্রেপ্তারিতে বলে সাফ জানিয়েছে হাইকোর্ট। ইতিমধ্যেই এই ধরনের কেস নিয়ে রাজ্যের পুলিশকর্মীদের সতর্ক করে দিতে বলেছে হাইকোর্ট।বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারির কারণ দেখিয়ে পুলিশকর্মীকে ধৃতের সঙ্গে চেক লিস্ট পাঠাতে হবে সিজেএম-র কাছে।তারপর বিচারক সেটি খতিয়ে বিবেচনা করবেন ধৃত হেফাজতে থাকবে কিনা?অন্যদিকে অভিযুক্তকে যদি গ্রেপ্তার না করা হয়, তাহলেও তার কারণ ব্যাখ্যা করে দু-সপ্তাহের মধ্যে পুলিশকে রিপোর্ট পাঠাতে হবে সুপারিন্টেন্ডেন্ট অফ পুলিশের কাছে।আর ওই সময়ের মধ্যেই অভিযুক্তকে ডেকে নিয়ে করতে হবে জিজ্ঞাসাবাদ।যদি এই নির্দেশ সঠিকভাবে না মানা হয় তবে পুলিশকেই পড়তে হবে শাস্তির মুখে বলে সাফ জানায় হাইকোর্ট।
২০২২ সালে কয়েকটি মামলার প্রেক্ষিতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ‘৪৯৮ ধারায় মামলা হলেই অভিযোগ খতিয়ে না দেখে অভিযুক্তকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা যাবে না। সেক্ষেত্রে ওই ধারার সঙ্গে সেকশন ৪০ যোগ করে আদালত। অর্থাৎ বধূ নির্যাতনের অভিযোগ পেলে পুলিশকে আগে সেকশন ৪০ প্রয়োগ করে থানায় ডেকে আনতে হবে অভিযুক্তকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে যদি মনে হয় গ্রেপ্তারির যৌক্তিকতা রয়েছে, তবেই তাকে গ্রেপ্তার করতে হবে।’
উল্লেখ্য, স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকের অত্যাচার থেকে বিবাহিত মহিলাদের সুরক্ষা প্রদান করতেই ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ৪৯৮(এ) ধারা যুক্ত করা হয়েছিল। এই আইনের অধীনে কোনও মহিলার অভিযোগ পাওয়া মাত্রই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার ক্ষমতা ছিল পুলিশের। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে দেখা গেছে এই আইনের অপপ্রয়োগ করে থাকেন অনেক মহিলা।এইসব দিক বিবেচনা করেই সুপ্রিম কোর্ট আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আনতে চেয়েছে। তারপরেই এ ব্যাপারে ফের আরও কড়া অবস্থান নেয় কলকাতা হাইকোর্ট।