উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যে হদিশ মিলল প্রায় দু’কোটি ভুয়ো রেশন কার্ডের। ভুয়ো রেশন কার্ড চিহ্নিত করার কাজ রাজ্যে শুরু হয়েছিল বছরখানেক আগেই। সেই পথে হেঁটে প্রায় দু’কোটি ভুয়ো রেশন কার্ডের সন্ধান পেয়েছে রাজ্য। ইতিমধ্যেই এই ভুয়ো কার্ড গুলি বাতিল করে দিয়েছে রাজ্যের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। সরকারি সূত্রের দাবি, এর ফলে শুধু এই খাতেই সাশ্রয় হবে বছরে অন্তত ৩৬০০ কোটি টাকা।
রাজ্যে ভুয়ো রেশন কার্ড বাতিলের লক্ষ্যে গ্রাহকদের আধার লিংক বাধ্যতামূলক করে সরকার। আর এর ফলেই কমে যায় বৈধ রেশন কার্ডের সংখ্যা। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, শুরুতে কিছুটা অনীহা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধার-যোগ পদ্ধতিকে মান্যতা দিতে কার্যত ‘বাধ্য হয়েছে’ রাজ্য। আর এ ক্ষেত্রে তাতেই লাঘব হয়েছে বিপুল সংখ্যক ভুয়ো রেশন কার্ডের বোঝা।
সূত্রের দাবি, ডিজিটাল রেশন কার্ড চালু হওয়ার পরে রাজ্যে উপভোক্তার সংখ্যা ছিল প্রায় ১০ কোটি ৭০ লক্ষ। দীর্ঘ দিন ধরেই রাজ্যে নিখরচায় রেশন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ফলে প্রতি বছর বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয় সেই খাতে। পরে রেশন কার্ডের সঙ্গে আধারের সংযুক্তিকরণের মাধ্যমে ভুয়ো, মৃত ব্যক্তির নামে থেকে যাওয়া রেশন কার্ড, এক ব্যক্তির একাধিক কার্ডের অস্তিত্ব খোঁজা ইত্যাদির প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই প্রক্রিয়ার শেষে এখন রাজ্যে রেশন কার্ডের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮ কোটি ৭৮ লক্ষ মতো।
জানা গিয়েছে, সাধারণত প্রতি মাসে এক জন রেশনগ্রহীতার জন্য নিখরচায় বরাদ্দ পাঁচ কিলোগ্রাম খাদ্যশস্য। প্রতি মাসে উপভোক্তাদের মাথাপিছু খাদ্যশস্যে সরকারের খরচ কমবেশি ১৫০ টাকা। সরকারের দাবি, সেই হিসাবে দু’কোটি কার্ডপিছু ফি মাসে রাজ্যের সাশ্রয় প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ, বছরে প্রায় ৩৬০০ কোটি। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইনে খাদ্যশস্য বাবদ বিপুল অর্থ দেয় কেন্দ্র। প্রতিটি রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযোগ করতেই হত রাজ্যকে। পাশাপাশি, আঙুলের ছাপ (বায়োমেট্রিক) দিয়ে রেশন তোলার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আগামী দিনে চোখের মণি যাচাই করার পদ্ধতি চালু করা নিয়েও ভাবনাচিন্তা রয়েছে কেন্দ্রের। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “যোগ্য উপভোক্তা নিজের রেশন যাতে নিজেই পেতে পারেন, সেই পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়া তার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।” তবে প্রশাসনিক মহলের ব্যাখ্যা, উপভোক্তা উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ দিতে পারলে, ‘ধরা পড়া নিষ্ক্রিয়’ কার্ড ফের সচল করে দেওয়া হবে।