দীপেন রায়, মেখলিগঞ্জ: ২৩৬ দিন। ২৩৬ দিন আগে পরেশ অধিকারীকে (Paresh Adhikary) তলব করেছিল সিবিআই (CBI)। আর এতদিনে, সোমবার এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ ও এসএসসি গ্রুপ-ডি কর্মী নিয়োগ নিয়ে দুর্নীতির (Recruitment Scam) অভিযোগে চার্জশিট (Chargesheet) জমা দিয়েছে সিবিআই। সেই চার্জশিটে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) নাম তো রয়েছেই। রয়েছে পরেশের নামও। আর একথা সামনে আসার পর থেকেই জল্পনা শুরু হয়েছে কোচবিহারের (Coochbehar) রাজনৈতিক মহলে। জেলা নেতারা যখন বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন, তখন নীচুতলার কর্মীরা আবার নাম না করেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদ্রুপ করতে শুরু করেছেন।
পরেশের নামে ষড়যন্ত্র, প্রতারণা, জেনেবুঝে প্রমাণ লোপাট, প্রোটেকশন অফ করাপশন অ্যাক্ট সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। যদিও এসব নিয়ে তিনি মাথা ঘামাতে নারাজ। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি কলকাতায় আছি। শুনেছি অনেক ধারায় চার্জশিট জমা করেছে সিবিআই। এখন সিবিআইয়ের দায়িত্ব সেগুলো প্রমাণ করার।’
এই চার্জশিটে নাম থাকা নিয়ে জেলা থেকে শুরু করে ব্লকের নেতারা দায় এড়াতে চাইছেন। তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মনের বক্তব্য, ‘আইন আইনের পথে চলবে।’ তবে তাঁর সংযোজন, ‘কেউ ব্যক্তিগতভাবে কোনও অপরাধ করলে দল তার দায়িত্ব নেবে না।’ একই সুর জেলার সহ সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত সরকারের গলাতেও। তাঁর বক্তব্য, ‘আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। সত্য-মিথ্যা আদালতে প্রমাণ হবে।’
এ তো গেল উঁচুতলার নেতাদের কথা। দলের আর একটা অংশের মধ্যে কিন্তু শুরু হয়েছে বিদ্রুপ ও কটাক্ষ। মেখলিগঞ্জের প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল যুবর সভাপতি তথা জেলা তৃণমূল যুবর সাধারণ সম্পাদক বাপ্পা মণ্ডল সোশ্যাল মিডিয়ায় পরেশের নাম না করেই লিখেছেন, ‘বামফ্রন্টের পচা আলু দিয়ে সিঙ্গারা বানিয়ে তৃণমূলের কর্মীদের খাওয়ালে পেট ব্যথা করবে। যারা এই সিঙ্গারা খেয়েছে তাদেরও সিজিও কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হচ্ছে।’ তৃণমূলের জয় হিন্দ বাহিনীর জেলার নেতা তথা মেখলিগঞ্জ ব্লকের প্রাক্তন ব্লক সম্পাদক মমিনুর আলমও কটাক্ষ করে লিখেছেন, ‘এসএসসি দুর্নীতির চার্জশিটে একজনের নাম আছে শুনলাম। এটা গর্বের। নববর্ষের উপহার বলে গর্ব করুন।’ প্রশ্ন করা হলে বাপ্পার মতো অনেকেই বলছেন, আমরা ভেবেছিলাম পরেশ শুধরে যাবেন। কিন্তু তিনি আমাদের দলকে কালিমালিপ্ত করেছেন।