নয়াদিল্লি: মণিপুর নিয়ে আলোচনা চাইলেও প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি নিয়ে মুখে কুলুপ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের। তবে কেন্দ্র জানিয়েছে, তারা মণিপুর নিয়ে আলোচনায় রাজি।
সোমবার মণিপুর ইস্যুতে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় অধিবেশন। পরিস্থিতির হাল ধরতে বার বার অধিবেশন মুলতুবি করতে বাধ্য হন উভয়কক্ষের অধ্যক্ষরা। এদিন সংসদে লোকসভার অধিবেশন শুরু হতেই প্রবল হইহল্লা করে ওয়েলে নেমে আসেন বিরোধী শিবিরের সাংসদরা। অন্যান্য তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গেই ওয়েলে নামেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এরপর সরকার পক্ষের তরফে বক্তব্য রাখতে উঠে বর্ষীয়ান নেতা রাজনাথ সিং বলেন, “আমরা চাই মণিপুর নিয়ে আলোচনা হোক। কিন্তু দুর্ভাগ্য বিরোধী শিবির তা চায় না।” কংগ্রেসের তরফে অধীর চৌধুরী বলেন, “প্রথমদিন থেকে আমরা দাবি করেছি, প্রধানমন্ত্রী সভায় আসুন। মণিপুর নিয়ে নিজের বক্তব্য রাখুন। কেন ভয় পাচ্ছেন মোদিজি?”
অন্যদিকে, বিরোধীদের কটাক্ষ করে কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশীর মন্তব্য, “মণিপুর নয়, বিরোধীদের আসল উদ্দেশ্য লোকসভার কাজ পণ্ড করা। এতে ক্ষতি হবে দেশের।” লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা অধীর সহ বিরোধী নেতাদের সতর্ক করে বলেন, “মণিপুর নিয়ে কে জবাবদিহি করবেন তার বিচার বিরোধীরা করতে পারে না। আপনারা আলোচনা শুরু করুন। তবে যাবতীয় সমাধানসূত্র বেরোবে।”
স্বাভাবিকভাবেই অধ্যক্ষ ওম বিড়লার আবেদন নস্যাৎ করেন বিরোধীরা। প্রবল হইচই শুরু হলে লোকসভার কাজ মুলতুবি রাখেন স্পিকার। সভার কাজ মুলতুবি হতেই গোটা পরিস্থিতি নিয়ে সংসদেই “রূদ্ধদ্বার” আলোচনায় বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা এবং বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা। চূড়ান্ত হয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মণিপুর ইস্যুতে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রীর বকলমে।
কিন্তু তাতে মোটেই রাজি হননি বিরোধী নেতৃত্ব। লোকসভায় অমিত শা বক্তব্য রাখতে ওঠা মাত্র প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় ফুঁসে উঠে বলেন, “মোদিজি কোথায়? কেন তিনি মুখ লুকোচ্ছেন?” অমিত শার দাবি, “এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। দয়া করে চর্চা শুরু করুন। কেন সংসদ চালাতে দিতে চাইছেন না আপনারা?” কিন্তু তাতে লাভ হয়নি, হইচই ও বিশৃঙ্খলায় কার্যত অচল হয় লোকসভা। অধ্যক্ষ ওম বিড়লা সারাদিনের জন্য সভা মুলতুবি করেন।