কোচবিহার: উত্তরবঙ্গ থেকেই পঞ্চায়েত ভোটের আনুষ্ঠানিক প্রচার শুরু করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের দুর্নীতির অভিযোগকে যে প্রচার তালিকায় শীর্ষে রাখবে বিরোধীরা সে কথাও বিলক্ষণ জানেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তাই দুর্নীতির অভিযোগ ঘোঁচাতে এবার জনসাধারণের হাতেই অধিকার তুলে দিলেন তিনি।
কোচবিহার জেলার চান্দামারি প্রাণনাথ হাইস্কুলের জনসভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উল্লেখ করে মমতা জানান, দলের যুব সমাজ এতদিন জেলায় জেলায় ঘুরে প্রার্থী বেছে নেওয়ার কাজ করেছে। তাঁর মতে ৯৯ শতাংশ প্রার্থী বাছাই হয়েছে দুর্নীতি মুক্ত পঞ্চায়েত গড়ে তুলতে। এরপরও এক শতাংশ প্রার্থী যদি দুর্নীতি করে থাকে, সেই কথা সরাসরি তাঁকে জানানোর জন্য জনসাধারণকে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘৯৯ শতাংশ প্রার্থী বাছাই ঠিক হয়েছে। তবে ১ শতাংশ আছে, যাঁরা চুরিও করবে, আবার টিকিটও চাইবে। এটা আমরা হতে দেব না।’ এরপরই দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষকে সজাগ করে মমতা বলেন, ‘এবার থেকে পঞ্চায়েত আমরা নিজেরা নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করব। আপনারা কাউকে চুরি করতে দেবেন না। কেউ যদি টাকা চায়, ছবি তুলে রাখবেন। এরপর আমাকে পাঠিয়ে দেবেন।’ প্রসঙ্গত, মানুষের অভাব অভিযোগ জানানোর জন্য ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’ বলে একটি পরিষেবা চালু করেছেন তিনি।
পাশাপাশি এদিনের সভায় মুখ্যমন্ত্রী কাজের খতিয়ান তুলে ধরেন। এছাড়া বকেয়া নিয়ে ফের আক্রমণ করেন কেন্দ্রীয় সরকারকে। তৃণমূল নেত্রী বলেন, ‘বাংলা থেকে টাকা তুলে নিয়ে গিয়ে প্রাপ্য টাকা দেয় না। গ্রামের রাস্তা তৈরির টাকা কেন্দ্রীয় সরকার বন্ধ করে দিয়েছে। কোচবিহার বিমানবন্দর তৈরির সব টাকা রাজ্য সরকার দিয়েছে। একশো দিনের কাজে ৭ হাজার কোটি টাকা পাওনা দেয়নি কেন্দ্র। বিধবা ভাতার টাকা কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।’ পাশাপাশি এদিনের মঞ্চে বিএসএফকেও নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন কোচবিহারের দক্ষিণ বিধানসভার চান্দামারিতে প্রাণনাথ হাইস্কুল প্রাঙ্গনে সভা করেন মমতা। কোচবিহারের জনসভা শেষ করার পর তৃণমূল নেত্রী জলপাইগুড়ি জেলায় মালবাজার যাবেন বলে খবর। সেখানে মঙ্গলবার মালবাজার সংলগ্ন এলাকাতেও তিনি জনসভা করতে পারেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। উত্তরবঙ্গজুড়ে আরও কয়েকটি সভা করার কথা রয়েছে তাঁর।