শামুকতলা: আলিপুরদুয়ার জেলায় আলুচাষিদের মধ্যে এখন খুশির আমেজ। খুলে দেওয়া হয়েছে জেলার অধিকাংশ হিমঘর। জানা যাচ্ছে, এবছর আলুর ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা। অনেক চাষি এবং ব্যবসায়ী ভিনরাজ্যে ইতিমধ্যেই আলু পাঠাতে শুরু করে দিয়েছেন। বাজারে আলুর দাম ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। ফলে চাষিদের পাশাপাশি লাভের মুখ দেখছেন ব্যবসায়ীরাও। এমনকি অসমের ব্যবসায়ীরা আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) এসে আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন সে রাজ্যে।
আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের উত্তর পারোকাটার হিমঘরের ম্যানেজার রাজীব দে বলছেন, ‘দু’দিন হল আমাদের হিমঘর খুলে দেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন এখান থেকে ১৭০০ থেকে ১৮০০ প্যাকেট আলু বের হচ্ছে।’ আলুচাষি গণেশ দেবনাথ জানান, শুরু থেকেই এবছর আলুর দাম ঊর্ধ্বমুখী। তাঁর মতে, জেলার বাকি হিমঘরগুলি খুলে দেওয়া হলে এবং ঠিকঠাকভাবে রপ্তানি শুরু হয়ে গেলে দাম আরও বাড়বে বলে আমরা আশাবাদী।’
কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর আলিপুরদুয়ার জেলায় ২০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। যেখানে ফলন হয়েছে প্রায় ৬ লক্ষ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন। শুরু থেকেই প্রতিনিয়ত দাম বাড়তে থাকায় অনেকে জমি থেকে আলু বিক্রি করে দিয়েছেন। আবার অনেকে বাড়িতে আলু মজুত রেখে পরে বিক্রি করে ভালো দাম পেয়েছেন। জেলার ১২টি হিমঘরে প্রায় দুই লক্ষ নয় হাজার মেট্রিক টন আলু মজুত করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়। তবে এখনও পর্যন্ত এবছর সবক’টি হিমঘর মিলিয়ে ওই পরিমাণের প্রায় ৮২ শতাংশ আলু মজুত রাখা সম্ভব হয়েছে।
দপ্তর সূত্রে খবর, গত সপ্তাহ থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত ১২টি হিমঘর খুলেছে। এই মুহূর্তে পাইকারি বাজারে সাদা আলুর দাম রয়েছে কমবেশি ২১ টাকা। অন্যদিকে কমবেশি ২৩ টাকায় বিকোচ্ছে লাল আলু। চাষিদের পাশাপাশি এবছর আলুর দাম আরও বাড়বে বলে আশাবাদী কৃষি দপ্তরের কর্তারাও।
এ প্রসঙ্গে আলিপুরদুয়ার জেলা কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) নিখিল মণ্ডল জানান, এবছর এখনও পর্যন্ত আলুর যা দাম রয়েছে, তাতে কৃষকরা অনেকটাই লাভবান হয়েছেন। তাঁর আশা, হিমঘরে আলু মজুত করে কৃষকরা আরও বেশি লাভ পাবেন। চাষিদের মুখে হাসি ফুটলেও দাম বাড়ায় ক্রেতাদের মুখ কিছুটা ভার।