রায়গঞ্জ: অক্সিজেনের অভাবে রোগী মৃত্যুর অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়াল রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। মঙ্গলবার উত্তাল হয়ে ওঠে মেডিকেল ক্যাম্পাস। রোগীর পরিজনদের বিক্ষোভ সামাল দিতে ছুটে আসতে হয় পুলিশকে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম দীনেশ ঘোষ (৬০)। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন। বাড়ি রায়গঞ্জের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সুদর্শনপুর এলাকায়। এদিন সকালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে মেডিকেলে ভর্তি করা হয় দীনেশবাবুকে। দুপুর ২টা নাগাদ হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ড থেকে ডায়ালিসিসে নিয়ে যাওয়ার সময় ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হয় তাঁর। অভিযোগ, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বারংবার অক্সিজেন দেওয়ার কথা বলা হলেও তা দেওয়া হয়নি। ফলে মৃত্যু হয় বৃদ্ধের। এরপরই মেডিকেল ক্যাম্পাসে চলে রোগীর পরিজনদের বিক্ষোভ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ।
মৃতের ছেলে সৌরভ ঘোষ জানান, তাঁর বাবার শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। সকালে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসক মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করেন। দুপুর ২টা নাগাদ ডায়ালিসিস করার কথা ছিল। সেইমতো তাঁর বাবাকে হুইল চেয়ারে বসিয়ে লিফট দিয়ে নামার পথে ফের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বারবার ডাকা হলেও তাঁরা অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে আসেননি। ফলে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয় তাঁর বাবার।
তিনি জানান, এনিয়ে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানাবেন তিনি। পুলিশ প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করুক। মেডিকেলে চিকিৎসা করাতে আসা অন্য রোগীর পরিজনদেরও বক্তব্য, মেডিকেলে ডাক্তারেরা নিজেদের খেয়ালমতন রোগী দেখতে আসেন। সঠিক চিকিৎসার অভাবে অনেক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবাদ করলেই পুলিশকে ফোন করে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। মিথ্যা মামলা সাজানো হয় রোগীর পরিজনদের বিরুদ্ধে।
রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যক্ষ প্রিয়ঙ্কর রায় বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’ এবিষয়ে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘কি কারণে ওই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে, তার কারণ জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। যদি কোনও স্বাস্থ্যকর্মীর গাফিলতির অভিযোগ পাই তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। তবে সমস্ত বিষয় জানার পরই পদক্ষেপ করা হবে।’