উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বড়ঞা কাণ্ডে নজিরবিহীন রায় হাইকোর্টের। কংগ্রেস প্রার্থীদের ফর্ম-বি জমা নিতে হবে কমিশনকে। নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে কংগ্রেস প্রার্থীদের। কংগ্রেসের দায়ের করা মামলায় বুধবার এমনই রায় দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এদিন অমৃতা সিনহার পর্যবেক্ষন, বড়ঞায় কংগ্রেস প্রার্থীদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া ফর্ম-বি জমা করতে গিয়ে যাতে ফের বাধার মুখে পরতে না হয় সে কারণে প্রয়োজনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নিতে হবে কমিশনকে।
এদিন পঞ্চায়েত নির্বাচনে অশান্তি নিয়ে রাজ্য সরকার ও নির্বাচন কমিশনকে কার্যত তুলোধোনা করেছে আদালত। বিচারপতি অমৃতা সিনহা এদিন পর্যবেক্ষণে মন্তব্য করেন, একটা পঞ্চায়েত ভোটে যদি এত রক্তপাত, হিংসা হয় তাহলে তা বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এদিন হাইকোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দিয়েছেন, বড়ঞার কংগ্রেস প্রার্থীদের বৃহস্পতিবার সিআরপিএফ নিরাপত্তা বলয় দিয়ে বিডিও অফিসে পৌঁছে দিতে হবে। যদি সিআরপিএফ নিরাপত্তা না দেওয়া যায় সেক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপারকে নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করে বিডিও অফিসে পৌঁছে দিতে হবে।
এদিন রাজ্যের তরফে বলা হয়, অতীতে ১৯৯৮, ২০০৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটেও রাজ্যে হিংসা হয়েছিল। এবার মাত্র আটটি ব্লকে অশান্তি হয়েছে। বাকি পরিস্থিতি শান্তই ছিল। রাজ্যের এই যুক্তি শুনে বিচারপতি সরাসরি বলেন, কবে কী হয়েছিল সেসব এখন টানবেন না।
অভিযোগ, মঙ্গলবার মনোনয়ন পর্বের শেষ দিনে বড়ঞা বিডিও অফিসে যে কংগ্রেস প্রার্থীরা ফর্ম- বি জমা দিতে গিয়েছিলেন, তাঁদের বাধা দেয় তৃণমূল। বি ফর্ম হল দলের প্রতীক পাওয়ার নথি। অর্থাৎ কোনও প্রার্থীকে কোনও দল তাদের প্রতীক দেওয়ার জন্য মনোনীত করছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, বিডিও অফিস চত্ত্বরে ১৪৪ ধারা জারি থাকা সত্ত্বেও শেষ দিন কংগ্রেসের লোকজনকে আটকে দেয় তৃণমূল। বিডিও অফিসের ভিতরে শাসকদল জমায়েত করে রেখেছিল বলেও দাবি তাঁর।
প্রসঙ্গত, কংগ্রেস প্রার্থীর হাত থেকে ফর্মভর্তি ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেল ৪টেয় মুর্শিদাবাদ জেলার বড়ঞায় বিডিও অফিসের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করছিলেন লোকসভায় বৃহত্তম বিরোধী দল কংগ্রেসের দলনেতা তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রাতভর সেখানে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অবস্থানে বসে ছিলেন তিনি। বুধবার বড়ঞায় অধীর চৌধুরী অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে নিয়ে যান সুবিচারের দাবিতে। বেলা হতেই বিডিও অফিস চত্বরে বাড়তে শুরু করেছে কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকদের ভিড়। শাসকদল তৃণমূলের পাশাপাশি স্থানীয় বিডিওর বিরুদ্ধেও পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ তুলেছেন অধীর। এ বিষয়ে চিঠি লিখেছেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে।
অধীর বুধবার সকালে বলেন, ‘‘এখানে আন্দোলন করার পাশাপাশি আমরা হাই কোর্টে যাচ্ছি। আমাদের দাবি, ‘কংগ্রেসের প্রতীক ফিরিয়ে দাও’। প্রবল গরমের কারণে আমরা নিজেদের পয়সায় জেনারেটর এবং ফ্যান আনতে চাইলেও, প্রশাসন ১৪৪ ধারার যুক্তি দিয়ে আনতে দেয়নি।’’স্পিকারের কাছে লোকসভার ‘পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটি’র চেয়ারম্যান অধীর আর্জি জানিয়েছেন, কমিটি গঠন করে ওই বিডিওর বিরুদ্ধে যেন পদক্ষেপ করা হয়। বুধবার তিনি বলেন, ‘‘ওই বিডিওকে আমি দিল্লি নিয়ে যাব। চিন্তা নেই।’’