অমিতকুমার রায়, হলদিবাড়ি: সবার সামনে দিয়েই বিপদ বাড়ছে। কোচবিহারের (Cooch Behar) হলদিবাড়ি (Haldibari) পাইকারি সবজি বাজারে এখন বাংলাদেশি লংকার (Chili) রমরমা। পাশেই বাংলাদেশের (Bangladesh) সীমান্ত হলেও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা নাকি জানেন না সেগুলি বাংলাদেশের লংকা। তাই একই দামে তা কিনে ভিনরাজ্যে পাঠাচ্ছেন এদেশের পাইকাররা। হলদিবাড়ি বাজারের লংকা ব্যবসায়ী সাত্তার মহম্মদ বলেন, প্রতিবেশী দুই দেশের জলবায়ু এক থাকায় মরশুমে একই ফসলের চাষ হয়। তাই লংকা দেখে তা কোন দেশের বোঝার উপায় নেই। অজান্তে বাংলাদেশি লংকা ভিনরাজ্যের বাজারে পাঠানো হচ্ছে।’ ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছেন হলদিবাড়ি ব্লকের লংকাচাষিরা। এমনটা চলতে থাকলে পাইকারি বাজারে লংকার দাম তলানিতে ঠেকবে বলে তাঁদের আশঙ্কা। বিএসএফের জলপাইগুড়ি রেঞ্জের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘বিষয়টি নজরে আসতেই তা রুখতে বিএসএফের তরফে তৎপরতা শুরু হয়েছে।’
প্রতিদিন সকাল হলেই দেখা যায়, ভ্যানে বা টোটোতে আসছে বাংলাদেশি লংকা। কিন্তু যে কৌশলে কাঁটাতার পেরিয়ে লংকা ঢুকছে, তাতে কিছুই করতে পারছে না বিএসএফ বা পুলিশ। দক্ষিণ বড় হলদিবাড়ি হেমকুমারী, দেওয়ানগঞ্জ ও পারমেখলিগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী। এখানকার অনেক বাসিন্দার কাঁটাতারের ওপারে রয়েছে চাষের জমি। সেখানে বছরভর তাঁরা চাষাবাদ করেন। অভিযোগ, চাষিদের একাংশ যতটা পরিমাণ জমিতে লংকা চাষ করেন তার থেকে অনেক বেশি লংকা নিয়ে আসেন হলদিবাড়ি পাইকারি বাজারে। স্থানীয় এক কৃষক বলেন, ‘রাতের অন্ধকারে বেড়ার ওপারে সীমান্ত এলাকায় লংকা জমা হয়। কৃষকরা অল্প দামে সেই লংকা কিনে নিজের জমির লংকার সঙ্গে মিশিয়ে নেয়। এরপর বিএসএফের সামনে দিয়ে ভ্যান বা টোটোতে চেপে অনায়াসেই সেই লংকা চলে আসছে হলদিবাড়ি পাইকারি বাজারে।’
দেওয়ানগঞ্জের এক লংকাচাষি আশঙ্কার সুরে বলেন, ‘এভাবে ভিনদেশের লংকা বাজারে আসতে থাকলে লংকার জোগান বৃদ্ধি পাবে। স্বাভাবিকভাবে জোগান বৃদ্ধি হলে দাম কমবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন এলাকার চাষিরা।’ সূত্রের খবর, হলদিবাড়ি পাইকারি বাজারে ভারতীয় সুপার লংকা, আকাশি লংকা ও বুলেট লংকা ১০০ টাকার বেশি কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশি লংকার কেজি ১০০ টাকার কম। একবার সীমান্তের গেট পেরিয়ে লংকা নিয়ে আসতে পারলেই কেল্লা ফতে। একজন পাচারকারী দিনে ১০ থেকে ১২ মন বাংলাদেশি লংকা নিয়ে আসছে।