কোচবিহার: ভুয়ো সিভিক ভলান্টিয়ারের নাম ঢুকিয়ে বছরের পর বছর ধরে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠল এক কনস্টেবলের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শনিবার কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আশরাফুল আলম নামে ওই কনস্টেবলের বাড়িতে যায় ডিএসপি ক্রাইম ভানু রাইয়ের নেতৃত্বে পুলিশের বিশেষ বাহিনী। সেখান থেকে কনস্টেবলের স্ত্রী বিনতি বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কনস্টেবলের স্ত্রীকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, বিনতি গৃহবধূ হলেও তাঁর অ্যাকাউন্টে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা পাওয়া গিয়েছে। অভিযুক্ত আশরাফুল কোচবিহার জেলা পুলিশ সুপারের দপ্তরে কর্মরত ছিলেন। তিনি কোচবিহারে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের বেতন, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট দেখভাল করতেন। পুলিশ জানতে পেরেছে, ১৪-১৫ জনের নামের ভুয়ো তালিকা বানিয়ে তাঁদের সিভিক ভলান্টিয়ার হিসেবে দেখিয়ে টাকা তুলতেন আশরাফুল। আর সেই টাকা তিনি জমা করতেন তাঁর নিজের লোকেদের অ্যাকাউন্টে। বিশেষ সূত্রে খবর, করোনা অতিমারির সময় থেকে এভাবে টাকা নয়ছয় শুরু করেন আশরাফুল।
প্রাথমিকভাবে জালিয়াতির পরিমাণ ৫২ লক্ষ টাকা বলে জানতে পারে পুলিশ। পরে তদন্তে জানা যায়, ওই কনস্টেবলের নামে শিলিগুড়িতে ফ্ল্যাট, বিভিন্ন জায়গায় বিঘার পর বিঘা জমি, একাধিক দামি গাড়ি রয়েছে। ফলে আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে বলেও তদন্তকারীদের ধারণা। যদিও এতদিন ধরে কীভাবে তালিকায় ভুয়ো নাম ঢুকিয়ে টাকা তুলে নিতে পারলেন ওই কনস্টেবল, জেলায় কতজন সিভিক ভলেন্টিয়ার রয়েছেন, তার তথ্য পুলিশকর্তাদের কাছে নিশ্চয়ই থাকে। তাহলে দিনের পর দিন, বছরের পর বছর টাকার বিল কীভাবে পাশ হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এই টাকা নয়ছয়ে ওই কনস্টেবল একাই জড়িত নাকি আরও কেউ এর পেছনে রয়েছেন, তার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। কনস্টেবলের স্ত্রীকে গ্রেপ্তারের পর জেরা করে এই নিয়ে আরও তথ্য পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ।