গৌরহরি দাস ও চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার: জেলা (Coochbehar) ব্যবসায়ী সমিতির দাবিকে কার্যত পাত্তাই দিলেন না পুরসভার চেয়ারম্যান (Coochbehar Municipality Chairman) রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindranath Ghosh)। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক করে ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তোলেন তিনি।
ট্রেড লাইসেন্সে খরচা বৃদ্ধি, নামজারিতে প্রতি স্কোয়ার ফুটে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে, বাজারে উপরতলা ও নীচতলার ভাড়ার মধ্যে বৈষম্য সহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে গত ২ মে পুরসভার কাছে দাবিপত্র দেয় জেলা ব্যবসায়ী সমিতি। গত ৪ মে সাংবাদিক বৈঠক করে ব্যবসায়ী সমিতি জানায় পুরসভাকে সাতদিনের সময় দেওয়া হয়েছে। দাবি না মিটলে লাগাতার ব্যবসা বনধ রেখে আন্দোলন হবে।
সাংবাদিক বৈঠকে রবিবাবু বলেন, ‘দীর্ঘ বছর কোচবিহার শহরে কোনও কর বাড়ানো হয়নি। রাজ্য ভ্যালুয়েশন বোর্ড সমীক্ষা করে কিছু কর বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী আপাতত তা স্থগিত রাখতে বলায় সেটা বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু কখনও কর মকুবের কথা বলা হয়নি।’ রবিবাবু বলেন, ‘কোচবিহার শহরে প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ীর ট্রেড লাইসেন্স নেই। এতে প্রতি বছরে পুরসভার প্রায় তিন কোটি টাকা করে ক্ষতি হচ্ছে। বড়বাজারে ১৪৫ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন। যাঁরা বাজারের ছাদের ১৪৫টি স্টল, যার আয়তন সবমিলিয়ে প্রায় দুই লক্ষ স্কোয়ার ফুট হবে। সেটা অবৈধভাবে দখল করে রয়েছেন। তাঁরা কোনও কাগজপত্র দেখাতে পারছেন না। কোনও করও দিচ্ছেন না।’
উদাহরণ দিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ‘ছোট হওয়া সত্ত্বেও জলপাইগুড়ি পুরসভা বছরে ১৯ কোটি টাকা কর পায়, দিনহাটা পুরসভা পায় প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকা, আলিপুরদুয়ার পুরসভা পায় প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা। সেখানে কোচবিহার পুরসভা পায় মাত্র ৯০ লক্ষ টাকা।’ রবিবাবু বলেন, ‘২০১০ সালের পর শহরে গড়ে ওঠা বড় বড় মল, হোটেল, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র জমির কর ১০০-১৫০ টাকা করে দিয়ে যাচ্ছে।’
নামজারি নিয়ে বলেন, ‘১০০ স্কোয়ার ফুটে ৩০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। অথচ পুরসভা তা জানতেও পাচ্ছে না বা তার থেকে পুরসভা কোনও পয়সাও পাচ্ছে না। অথচ সেটা পুরসভার স্টল। যেটা পুরসভাকে না জানিয়ে করা পুরোপুরি বেআইনি।’ রবিবাবু আরও বলেন, ‘কিছু পয়সাওয়ালা লোক রয়েছে, তারা দুটো-তিনটে-চারটে নামে কয়েকশো স্টল কিনে তাতে দোকানদারি না করে বেআইনিভাবে গোডাউন করে রেখেছেন। তাতে কী রয়েছে আমরা জানি না। আবার অনেকে দোকান নিয়ে নিজে না করে অনেক পয়সার বিনিময়ে অন্যকে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন।’
কোচবিহার জেলা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুরজ ঘোষ বলেন, ‘যে ১৪৫টি স্টল বা দুই লক্ষ স্কোয়ার ফুট জায়গার কথা বলা হচ্ছে সেটা ঠিক নয়। প্রত্যেক ব্যবসায়ীর কাছে বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। কারও কাছে কাগজপত্র না থাকলে তার বিরুদ্ধে পুরসভা ব্যবস্থা নিতে পারে।’