শিলিগুড়ি: গ্রাহকের টাকা না দিয়ে তাঁকে হেনস্তার অভিযোগে একটি বেসরকারি বিমা সংস্থাকে জরিমানা করল দার্জিলিং জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। মামলাকারীকে বিমার প্রায় ৪০ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং ৫ হাজার টাকা মামলার ফি বাবদ দিতে হবে ওই বিমা সংস্থাকে। ৪৫ দিনের মধ্যে সমস্ত হিসেব বুঝিয়ে দিতে বলা হয়েছে। স্টেট সার্কিটে আবেদন করতে হলে এই তারিখের মধ্যেই করতে হবে। নয়তো অভিযুক্ত পক্ষের হয়ে যাঁরা মামলায় পার্টি ছিলেন তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হবে বলে নির্দেশিকায় বলা হয়েছে। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের বিচারক অপূর্ব ঘোষ বৃহস্পতিবার এই রায় দিয়েছেন।
২০১৮ সালের ২ ডিসেম্বর সকাল ৭টা নাগাদ বিধান মার্কেটের একটি কাপড়ের দোকানে আগুন লাগে। পুড়ে ছাই হয়ে যায় গোটা দোকান। আগে থেকেই দোকানের সামগ্রীর বিমা করে রেখেছিলেন ব্যবসায়ী লিপটন সাহা। তাই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পরেই দ্রুত তিনি বিমা সংস্থাকে পুরো বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে বিমা সংস্থার সমীক্ষক ওই সকালেই এসে এলাকা পরিদর্শন করে দিয়ে রিপোর্ট দেন। এরপর বিমার টাকা চেয়ে সংস্থায় আবেদন করেন ব্যবসায়ী। কিন্তু কিছু অপ্রাসঙ্গিক কারণ দেখিয়ে ওই বিমা সংস্থার তরফে ব্যবসায়ীর আবেদন বাতিল করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর ২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে বিমা সংস্থার বিরুদ্ধে মামলা করেন ব্যবসায়ী। মামলায় তিনি বিমার ৫০ লক্ষ টাকা, হেনস্তা করার জন্যে ২০ হাজার টাকা এবং মামলার খরচ বাবদ ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। সংস্থার ডিভিশনাল ম্যানেজার এবং সিনিয়ার ব্রাঞ্চ ম্যানেজারকে ওই মামলায় পার্টি করা হয়। সেই থেকে শুনানি চলছিল মামলার। বৃহস্পতিবার ছিল রায়দান।
বিচারক বিমা সংস্থার বিপক্ষে রায় দেন। নির্দেশ অনুযায়ী, ওই সংস্থাকে বিমার টাকা বাবদ ৪০ লক্ষ ২৭ হাজার ৯৭৪ টাকা মামলাকারীকে দিতে হবে। এর পাশাপাশি এতদিন গ্রাহককে হেনস্তা করার জন্যে ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং ২০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। শুধু তাই নয়, যেদিন থেকে মামলা হয়েছে সেদিন থেকে এখনও পর্যন্ত ৭ শতাংশ সুদের হারে সব টাকা মামলাকারীকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এর পাশাপাশি ক্রেতা সুরক্ষা আদালতেও ১০ হাজার টাকা জরিমানা বাবদ দিতে হবে বলে জানিয়েছেন মামলাকারীর আইনজীবী কাকলি ঘোষ। তিনি বলছেন, ‘সমীক্ষক রিপোর্ট দিয়ে টাকা দিতে বলেছিলেন। কিন্তু বিমা সংস্থা ইচ্ছে করে টাকা আটকে রেখেছিল। তাই আমরা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে গিয়েছিলাম।’