উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বিচারক ও বিচারপতিরা যে প্রবাদ প্রবচন মুক্ত নয়, তা বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে সামনে। এবার এলাহাবাদ হাইকোর্টের এই রায়কে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট বিচারপতি কুসংস্কারচ্ছন্ন বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা গিয়েছে, মামলাতে বলা হয়েছে ধর্ষিতার সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি ধর্ষকের পরিবার। কারণ, ধর্ষিতা নাকি ‘মাঙ্গলিক’। অর্থাৎ নির্যাতিতার মঙ্গলের দোষ আছে। ধর্ষকের পরিবারের এমন দাবি খতিয়ে দেখতে গত ২৩ মে লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষ শাস্ত্র বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছিলেন এলাহাবাদ হাইকোর্টের এক বিচারপতি। এমন বিচিত্র রায়ের কথা সংবাদমাধ্যমে জানতে পেরে শনিবার স্থগিতাদেহ জারি করল সুপ্রিম কোর্ট।
মূল অভিযোগ, অভিযুক্ত ব্যক্তি বিয়ের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মহিলাকে ধর্ষণ করে। আদালতে সেই অপরাধ প্রমাণিত হয়। ধর্ষিতার পরিবার অভিযুক্তের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আর সেই প্রস্তাবেই বেঁকে বসে ধর্ষক ও তার পরিবার। বলা হয়, ধর্ষিতা মাঙ্গলিক। তাই বিয়ে সম্ভব নয়। অভিযুক্ত পক্ষের এই বক্তব্য খতিয়ে দেখে দ্রুত আদালতে রিপোর্ট জমা করতে হাইকোর্ট লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষ শাস্ত্র বিভাগকে নির্দেশ দেয়। এরপরই সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সুধাংশ ধুলিয়া এবং পঙ্কজ মিথ্যাল গতকাল নিজেরাই বিশেষ বেঞ্চ গঠন করে এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেন। রায়টি অবাঞ্ছিত, অবাক করা এবং অপ্রত্যাশীত বলেও মন্তব্য করেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুযায়ী কোনও নারী বা পুরুষের রাশির চতুর্থ, সপ্তম, অষ্টম এবং দ্বাদশ পর্বে মঙ্গল গ্রহের প্রভাব থাকলে তাঁকে মাঙ্গলিক বা মঙ্গল দোষে দুষ্ট বলা হয়। আর কোনও নারী বা পুরুষ মাঙ্গলিক হলে বিবাহিত জীবন সুখের হয় না। এই মহিলা ও পুরুষদের গাছের সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার রীতি আছে বহু রাজ্যে। এবার দেখা যাচ্ছে বিচারপতিও এই বিশ্বাসের বাইরে নন।