হরিশ্চন্দ্রপুর: বিগত কয়েকদিন ধরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে অশান্তির খবর সামনে আসছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অভিযোগের তির রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের দিকে। তবে এবার তৃণমূল নয় টাকা নিয়ে টিকিট বিক্রির অভিযোগ উঠল হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার সিপিএম নেতৃত্বের বিরুদ্ধে। লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভে শামিল হলেন সিপিএম কর্মীদের একাংশ। অভিযোগ, দলের যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত রেখে অযোগ্য প্রার্থীকে টিকিট দেওয়া হয়েছে। ওই অযোগ্য প্রার্থীর হয়ে দলের কেউ ভোট চাইতে গেলে তাঁকে গাছে বেঁধে জুতোপেটা করার নিদান দেওয়া হয়েছে বিক্ষুব্ধ কর্মীদের তরফে। মঙ্গলবার হরিশ্চন্দ্রপুর-১ এর রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের বিধুয়া-ডাঙ্গিলা মোড়ে বিক্ষোভ দেখান সিপিএমের সমর্থকদের একাংশ। তাঁরা পঞ্চায়েত কনভেনার আব্দুল মান্নান ও সিপিএম রাজ্য কমিটির সদস্য জামিল ফিরদৌসের ছবিতে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন।
বিক্ষুব্ধ সিপিএম কর্মীদের অভিযোগ, দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের নির্দেশে রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি আসনে জোট প্রার্থী হিসেবে সিপিএমের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র জমা করেছিলেন সুরভি খাতুন। এমনকি ভোট প্রচারে নেমেও পড়েছিলেন তিনি। এরপরই দল সিদ্ধান্ত বদলে ফেলে। তাঁকে আর টিকিট দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন রশিদাবাদ অঞ্চলের সিপিএমের কনভেনার আব্দুল মান্নান। তবে কি কারণে টিকিট দেওয়া হবে না, তা তিনি স্পষ্ট করে বলেননি। প্রতিবাদীদের একটাই দাবি, কেন যোগ্য প্রার্থী সুরভি খাতুনকে টিকিট না দিয়ে অযোগ্য প্রার্থী নুঝতবাণুকে টিকিট দেওয়া হল। এতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেন হয়েছে।
বিক্ষোভকারী রিয়াজউদ্দিন জানান, দলের নেতারা বুথে বসে সকলের সামনে টিকিট দেওয়ার কথা দিয়েছিলেন। তাদের কথামত ১৫ জুন ব্লকে মনোনয়নপত্র জমা করেছিলেন জোট প্রার্থী সুরভি খাতুন। এরপর দল সিম্বল দিতে চাইছে না। এর পরিবর্তে একজন অযোগ্য প্রার্থীকে সিম্বল দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। শাসকদলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সিপিএম এই ধরনের কাজ করছে। তাই তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই অযোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন না। রশিদাবাদ অঞ্চলের সিপিএমের কনভেনার আব্দুল মান্নান জানান, যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা দলের কেউ না। টাকার বিনিময়ে টিকিট বিক্রির অভিযোগ একেবারে ভিত্তিহীন। যে প্রার্থীকে টিকিট দেওয়ার দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন সেই সুরভি খাতুনের বাড়ি মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। তাই দলের সিদ্ধান্তে তাঁকে টিকিট দেওয়া হয়নি। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য শাসকদলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে এই ধরনের কাজ করা হচ্ছে। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য জামিল ফিরদৌসের সাফাই, যাঁরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা দলের কেউ না, দল তাঁদের চেনে না। তাঁরা শাসকদলের হয়ে কাজ করছে। এই মুহূর্তে দলের বদনাম করার জন্য বিক্ষোভ দেখিয়েছেন তাঁরা। এগুলো শাসক দলের চক্রান্ত।