প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: পঞ্চায়েত ভোটের আগের দিন ভোটকর্মীদের সৌজন্য জানাতে যাওয়া সিপিএম কর্মী শেখ রাজিবুলকে হত্যার দায়ে গ্রেপ্তার হল তৃণমূলের দুই কর্মী। পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম থানার পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতদের নাম জালালউদ্দিন মোল্লা ও শেখ আবুল হোসেন ওরফে কচি। আউশগ্রাম থানার বেলেমাঠ এলাকা জালালউদ্দিনের বাড়ি। অপরজনের বাড়ি আউশগ্রাম থানারই বিষ্ণুপুর গ্রামে। পুলিশ শনিবার রাতে বাড়ি থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। রবিবার ধৃতদের পেশ করা হয় বর্ধমান সিজেএম আদালতে। তদন্তের প্রয়োজনে ধৃতদের ৭ দিন নিজেদের হেপাজতে নিতে চেয়ে আদালতে আবেদন জানান তদন্তকারী অফিসার। ভারপ্রাপ্ত সিজেএম ধৃতদের ৫ দিনের পুলিশ হেপাজত মঞ্জুর করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ বিষ্ণুপুর গ্রামে সিপিএমের কর্মীরা ৭, ৭এ ও ৮ নম্বর বুথের ভোটকর্মীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যান। ভোটকর্মীদের কাছে তাঁরা সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানান। সেখান থেকে ফেরার সময় তৃণমূলের লোকজন রড, শাবল, লাঠি, ধারাল অস্ত্র প্রভৃতি নিয়ে সিপিএমের কর্মীদের উপর হামলা চালায়। হামলায় সাদেক আলি ও শেখ রজবউদ্দিন জখম হন। শেখ রাজিবুল মাথায় গুরুতর আঘাত পান। জখমদের সবাইকে বননবগ্রাম ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে রাজিবুলকে বর্ধমান হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে কলকাতার এনআরএসে স্থানান্তরিত করা হয়। শনিবার সকাল ৯টা নাগাদ সেখানেই রাজিবুল মারা যান।
রাজিবুলের ভাই শেখ আজাহারউদ্দিন ঘটনার কথা জানিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে আউশগ্রাম থানার পুলিশ। এফআইআরে তৃণমূলের এক প্রধান ও এক প্রভাবশালী নেতা সহ ১৭ জনের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে দু’জন বাদে বাকি কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভে ফুঁসছে আউশগ্রামের বাম কর্মীরা।
ময়নাতদন্ত শেষে এদিন বিকেলে সিপিএম কর্মী রাজিবুলের মৃতদেহ সিপিএমের বর্ধমান জেলা পার্টি অফিসে পৌঁছায়। সেখানে নিহত বাম কর্মীকে শেষ শ্রদ্ধা জানান দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম সহ দলের রাজ্য ও জেলা নেতৃত্ব। এরপর মৃতদেহ নিয়ে তারা আউশগ্রামের বিষ্ণুপুর গ্রামের বাড়ির দিকে রওনা দেন। সেখানেও যান সেলিম।