মাটিগাড়া: পঁচিশজন মহিলা জওয়ানের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহায়তার আর্জি। ফোন করে সেই আবেদন জানিয়েছিল নিজেকে জওয়ানের পরিচয় দেওয়া এক ব্যক্তি। সারদাপল্লির এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীর স্ত্রী প্রথমে কিছুটা অবাক হন বটে। তবে মহিলা জওয়ানদের অসুস্থতার কথা শুনে তিনি নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি।
আবেদনে সাড়া দিতেই মোবাইলে চলে আসে একটি লিংক। সেই লিংকে ক্লিক করে টাকা পাঠানোর কিছুক্ষণ পর ওই মহিলা ও তাঁর স্বামী বুঝতে পারেন, তাঁরা সাইবার প্রতারণার (Cyber crime) ফাঁদে পা দিয়েছেন। কারণ, বিকেলের দিকে অ্যাকাউন্টের ব্যালেন্স চেক করতেই দেখা যায়, প্রায় ছয় লক্ষ টাকা উধাও। গোটা বিষয়টি জানিয়ে ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবারের। প্রতারিত অবসরপ্রাপ্ত কর্মী জানিয়েছেন, সেদিন দুপুরের দিকে হঠাৎ স্ত্রীর মোবাইলে ফোন আসে। ওপার থেকে এক ব্যক্তি নিজেকে সতীশ কুমার নামে পরিচয় দেয়। তারপর জানায়, পেশায় সে জওয়ান আর পঁচিশজন মহিলা সেনা জওয়ানের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রয়োজন।
পালটা যখন প্রশ্ন করা হয়, এভাবে হঠাৎ করে টাকা কেন দেওয়া হবে? উত্তরে ওই প্রতারক দেশাত্ববোধের আশ্রয় নেয় বলে অভিযোগ। বেশ কিছুক্ষণ সে নিয়ে মহিলাকে রীতিমতো মগজ ধোলাই করে। তারপর আর্থিক সহযোগিতা দিতে বৃদ্ধা রাজি হতেই সঙ্গে সঙ্গে লিংক চলে আসে। অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর অভিযোগ, ‘আমার স্ত্রী অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে কিছু টাকা পাঠায়। যদিও বেলা গড়ানোর পর মোবাইলে অ্যাকাউন্ট চেক করতেই বুঝতে পারি যে, প্রতারণার শিকার হয়েছি। অ্যাকাউন্টে থাকা সব টাকা উধাও হয়ে গিয়েছে। তারপর সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করি।’
শিলিগুড়ি (Siliguri) শহর ও সংলগ্ন এলাকায় গত এক মাসে একাধিক ভুয়ো পরিচয় দিয়ে লুঠের অভিযোগ সামনে এসেছে। কোনও প্রতারক নিজেকে জিএসটি আধিকারিক, আবার কেউ পুলিশ কর্তার ভুয়ো পরিচয় দিয়েছে। এবার জওয়ানের পরিচয় দিয়ে সাইবার প্রতারণায় আশঙ্কা আরও বাড়ল। সাইবার ক্রাইম তদন্তকারীরা জানালেন, এ ধরনের প্রতারণা থেকে বাঁচতে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। আবেগে ভেসে গেলেই হতে পারে বিপদ।