বেলাকোবা: ৩ কোটি ৬১ লক্ষ সরকারি টাকা ব্যয় করে জলপাইগুড়ির বেলাকোবা সংলগ্ন বোদাগঞ্জের ভ্রামরি দেবী মন্দিরের ভোজনালয় তৈরি করা হয়েছে। পাঁচ বছর হয়ে গেলেও সেটি চালু হয়নি। বতর্মানে ওই ভোজনালয়ের অবস্থা কার্যত বেহাল হতে শুরু করেছে। আর এই নিয়েই ক্ষোভ জমেছে মন্দির কমিটি থেকে শুরু করে মন্দিরে আশা পুন্যার্থীদের মধ্যে।
বৈকণ্ঠপুর জঙ্গল ঘেরা বেলাকোবা সংলগ্ন এই ভ্রামরি দেবীর মন্দির এক ঐতিহ্যপূর্ণ মন্দির। উত্তরবঙ্গের থেকে এমনকি সিকিম, অসম থেকেও ভক্তরা এখানে পুজো দিতে আসেন। মূলত শিবরাত্রির সময় এই মন্দিরের বাৎসরিক পুজো হয়। বেশ কয়েকদিন ধরে চলে মেলা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেইসময় প্রচুর ভক্ত সমাগম হয় এই মন্দিরে। মন্দির কমিটির তরফে মন্দিরে আসা ভক্তদের জন্য থাকার পুজো দেওয়ার, খিচুড়ি ভোগের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। তবে খিচুড়ি খাওয়ার জন্য ভোজনালায় থেকেও নেই। ভক্তদের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের বন দপ্তরে এবং পর্যটন দপ্তরের উদ্যোগে ৩ কোটি ৬১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই মন্দিরে ভোজনালয় তৈরি করা হয়েছে। ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর তৎকালীন পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এই ভোজনালয়টির উদ্বোধন করেছিল। কিন্তু উদ্বোধনের পর আজও একবারের জন্যও সেই ভোজনালার ব্যবহার করা হয়নি। অর্থাৎ সেই থেকেই ঘরটি তালাবন্ধ অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু কেন? কেন উদ্বোধনের পরও ভোজনালয়টির ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রশ্ন তুলেছে একাধিক পুন্যার্থী থেকে শুরু করে মন্দির কমিটিও। কমিটির সম্পাদক রনুকান্ত রায় বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা খরচ করে ভোজনালয়টি তৈরি করার দরকার বা কি? যদি সেটা পুন্যার্থীদের কাজে না লাগে। এর আগেও রাজগঞ্জ ব্লকের তৎকালীন বিডিও পঙ্কজ কোনার এসে পরিদর্শন করেও গিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও ভোজনালয়ের দরজা খোলেনি।‘ জানা গিয়েছে, ভোজনালয়ের নেই কোনও পানীয় জলের ব্যবস্থা, নেই ইলেকট্রিকের ব্যবস্থা বসে খাওয়ার ব্যবস্থা রান্নার বাসনপত্র। তাহলে তড়িঘড়ি উদ্বোধন কেন? প্রশ্ন সুব্রত রায়, বিশাল দাসের মতো অনেক ভক্তদের।
মন্দির কমিটির সভাপতি তথা তৃণমূলের জেলা এসটি ওবিসি সেলের সভাপতি কৃষ্ণ দাসও এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সদিচ্ছার অভাব হেতু এটা করা হচ্ছে না। যদি এই সাড়ে তিন কোটি টাকা মন্দির কমিটির হাতে তুলে দেওয়া হত, তাহলে আরও ভালোমতো পরিষেবা করা হত।‘ রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রূপালী দে সরকার বলেন, ‘বিষয়টি জেনে যথাযথ উদ্যোগ নেব।‘ পর্যটক দপ্তরের এক উচ্চ আধিকারিক বলেন, ‘ভোজনালয় উদ্বোধনের পর ২০২১ সালে অক্টোবরে বিডিও উপস্থিতিতে এটি রাজগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতিকে হস্তান্তর করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পর্যটন দপ্তরের কিছু করার নেই।‘