গৌরহরি দাস, কোচবিহার: নিশীথ প্রামানিককে (Nisith Pramanik) প্রার্থী ঘোষণা করার পর নগেন রায় বিরুদ্ধাচরণ করায় কোচবিহার জেলায় পদ্ম শিবির এমনিতেই কিছুটা অস্বস্তিতে রয়েছে। তার উপর দলে গুরুত্ব না পাওয়ায় বিজেপির (BJP) গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞ বেশ কিছু নেতা দীর্ঘদিন ধরে কার্যত বসে রয়েছেন। এতেও বিজেপির চাপ বাড়ছে। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো এই সমস্ত নেতাদের কেউ কেউ লোকসভা ভোটের মুখে সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত সরাসরি বিদ্রোহ ঘোষণা শুরু করায় বিজেপির চাপ আরও বাড়তে শুরু করেছে।
রবিবার দলের প্রাক্তন জেলা সম্পাদক অজয় সাহা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করে লেখেন, ‘এবার বিজেপির পুরোনো অবহেলিত, অবহেলন, অবহেলা, উপেক্ষা, অবজ্ঞা, অযত্ন, অবলীলা, বঞ্চিত কর্মী ও নেতৃত্বর দাম আছে কি না সেটা বুঝবে।’ পোস্ট দেখে এটা পরিষ্কার যে দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই এই পোস্ট করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে দলের কোচবিহারের জেলা সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘দলে কোনও সমস্যাই নেই। কয়েকজন যাঁরা বাইরে ছিলেন, রবিবার তাঁদের দলের আমন্ত্রিত সদস্যের তালিকায় ঢুকিয়ে নেওয়া হয়েছে। আরও কেউ বাকি থাকলে তাঁদেরও দলের অ্যাডভাইজারি কমিটিতে ঢুকিয়ে নেওয়া হবে।’
গত বিধানসভা ভোটেও তৎকালীন জেলা সহ সভাপতি সঞ্জয় চক্রবর্তী, জেলা সহ সভাপতি প্রণব পাল, জেলা সম্পাদক অজয়, জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ, নেতা রাজু রায়দের মতো আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ নেতা দলের অন্যতম সক্রিয় নেতা ছিলেন। তাঁরা দলের অন্যতম সংগঠকও বটে। কিন্তু দলে গুরুত্ব না পেয়ে গত দুই-তিন বছর ধরে তাঁরা পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় হয়ে রয়েছেন। অথচ গত বিধানসভা ভোটে কোচবিহারে (Cooch Behar) দলের ভালো ফলাফলের পিছনে এই নেতাদের যথেষ্টই ভূমিকা ছিল। দলের হয়ে কাজ না করলেও সম্প্রতি তাঁদের স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ নামে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন থেকে কোচবিহারে বড় মিছিল পর্যন্ত বের করতে দেখা গিয়েছে। এ নিয়ে জেলায় ব্যাপক শোরগোল হলেও দল সেভাবে বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়নি। তবে রবিবার অজয় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করার পর এ নিয়ে ব্যাপক হইচই শুরু হয়েছে। এই পোস্টে নারায়ণ সরকার নামে একজনের মন্তব্য, ‘ওল্ড ইজ গোল্ড কথাটা আদিযুগ থেকে চলে আসছে। হয়তো সবসময় এর মূল্যায়ন হয় না। কিন্তু সঠিক মূল্যায়ন না হলে অনেক বড় বড় জাহাজ ডুবে যায়। যেমন টাইটানিক।’
পরে পোস্টের বিষয়ে অজয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘দলের পুরোনো কর্মীরা ব্রাত্য হয়ে রয়েছি। দলের পদাধিকারী থেকে শুরু করে জেলা সভাপতি, প্রার্থী কেউ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে না। তাঁরা মনে করছেন পুরোনো কর্মীদের দরকার নেই। তৃণমূল (TMC) থেকে আসা কর্মীরা যারা ভাগা দিতে পারবে তাদেরকেই দরকার। সে কারণে তাদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আর দুর্দিনে আমাদের মতো পাশে থাকা কর্মীদের বসিয়ে রাখা হচ্ছে। এ কারণেই এই পোস্ট করেছি।’