নাগরাকাটাঃ গাড়ি, বাইক কিংবা সাইকেলের চাকা যে গাছের রস থেকে তৈরি হয় তা আগে জানা ছিল না পঞ্চম শ্রেণীর রোশনি পারভিন কিংবা চতুর্থ শ্রেণীর পড়ুয়া কণিকা শৈব্যদের। সবকিছু নিজের চোখে দেখে তাঁরা তো তখন কার্যত থ। শুক্রবার গ্রাসমোড়ের আঞ্চলিক রাবার গবেষণা কেন্দ্রে(Regional Rubber Research Centre) শিক্ষামূলক ভ্রমণে(educational trip) গিয়ে এমন হাজারও অজানা বিষয় জানতে পেরে চোখে মুখে আনন্দ যেন আর ধরে না চা বাগান ও বনবস্তী ঘেরা প্রত্যন্ত ঘাসমারী স্টেট প্ল্যান প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ক্ষুদেদের। রাজ্যের একমাত্র ওই রাবার গবেষণা কেন্দ্রের অফিসার ইন চার্জ ডঃ জয়ন্ত সরকার নিজেই ছাত্রছাত্রীদের রাবার চাষ ও সেই সংক্রান্ত নানা বিষয় ছাত্রছাত্রীদের সহজ সরল ভাষায় বুঝিয়ে দেন। ছিলেন ফিল্ড অ্যাসিট্যান্ট সন্তোষ পানতাতি। স্কুলের বর্ষীয়ান শিক্ষক সুষেন নার্জিনারি বলেন, ‘বর্তমানে ছাত্র দিবস পালিত হচ্ছে। এই উপলক্ষ্যে রাবার গবেষণা কেন্দ্রকে আমরা আবেদন করেছিলাম ছাত্রছাত্রীদেরকে বিজ্ঞান নির্ভর রাবার গবেষণার কর্মকাণ্ডের সঙ্গে পরিচিতি ঘটানোর জন্য। তাতে ওঁরা সাড়া দেওয়ায় কৃতজ্ঞ থাকলাম’। আরেক শিক্ষক মহম্মদ আলি আনসারি বলেন, ‘শুধু কি আর পড়ুয়ারা। সেখানে না গেলে বহু কিছু আমাদেরও অজানা থেকে যেত’।
এদিনের ওই পরিদর্শনে স্কুলের প্রায় চল্লিশ জন ছাত্রছাত্রী যায়। প্রত্যেকেই চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীতে পাঠরত। রাবার গাছের রস সংগ্রহ করে তারপর কিভাবে প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে রাবারের শিট তৈরি করা হয় তা পড়ুয়াদের দেখানো হয়। শুধু চাকাই নয়। রাবার থেকে যে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার সামগ্রী তৈরি হয় সেটাও এদিনই প্রথম ক্ষুদেরা জানতে পারে। কলম পদ্ধতিতে রাবার গাছের চারা তৈরির প্রক্রিয়া, পরিণত রাবার গাছ ও সেগুলি থেকে রস বা ল্যাটেক্স সংগ্রহের কৌশল, ওই গবেষণা কেন্দ্রের ওয়েদার স্টেশন সমস্ত কিছুই ছাত্রছাত্রীরা চাক্ষুস দেখে আসে। একটি রাবার চারা লাগানোর পর অন্তত ৭ বছর পর রস মিলতে পারে সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। রাবার যে অর্থকরী একটি চাষবাস সেটাও প্রত্যেককে বুঝিয়ে্ বলা হয়। কৃষ প্রধান, আয়ুশ ওরাওঁ, অর্জুনা বেগমের মত ছাত্রছাত্রীরা যখন সবকিছু দেখে শুনে ফের স্কুলের পথে তখনও তাঁদের চোখে মুখে বিস্ময়ের ছাপ স্পষ্ট।