নাগরাকাটা: ভোটের আগে চা বলয়ে বিক্ষুব্ধ কাঁটাই কি অস্বস্তির কারণ হচ্ছে বিজেপির? কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী জন বারলার অনুগামীদের প্রচারে গরহাজিরের জন্য এখন এ প্রশ্নই ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। চা বলয়ে বিজেপির জেতা আসন নাগরাকাটা বিধানসভার পরিস্থিতি বেহাল বলে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলেছেন মন্ত্রীর বোন মেরিনা কুজুর বারলা। এজন্য তিনি দলের স্থানীয় নেতৃত্বকে দুষছেন। পাশাপাশি তাঁরা যে প্রচারে নীরব হয়েই আছেন সেকথা খোলাখুলিই স্বীকার করেছেন বারলা প্রভাবিত চা শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের নেতারা। যদিও এসব কথা মানতে চাননি নাগরাকাটার বিজেপি বিধায়ক। তাঁর দাবি, এবার ২০১৯-এর চেয়ে বেশি ভোটে জিতবেন দলীয় প্রার্থী।
যদিও ভারতীয় টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রহেন মিঞ্জ বলেন, ‘আমরা যে সমস্ত শর্তের কথা বলেছিলাম তা নিয়ে বিজেপি থেকে কেউ যোগাযোগ করেনি। এই অবস্থায় কীভাবে প্রচার সম্ভব? আগামী মঙ্গলবার মেটেলিতে সংগঠনের ডুয়ার্স-তরাইয়ের শীর্ষ নেতৃত্বের একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
নাগরাকাটার সুলকাপাড়ার বাসিন্দা বারলার বোন মেরিনা এক সময়ে বিজেপির টিকিটে সুলকাপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। যদিও গত পঞ্চায়েত ভোটে তিনি দাঁড়াননি। মেরিনা জানিয়েছেন, দলের কেউ যোগাযোগ করেনি। বিজেপির পরিস্থিতি ভােলা না। এজন্য এক শ্রেণির স্থানীয় নেতাই দায়ী। তাঁর পালটা প্রশ্ন, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে কী আর ভোটের আগে ঘরে বসে থাকতাম? বিটিডব্লিইউইউ-র শীর্ষ নেতা তথা বারলা অনুগামী সন্তোষ হাতি বলেন, ‘দলের কেউই আমাদের সঙ্গে কথা বলেননি। তাই, বাগানগুলিতে সংগঠন থেকে কাউকে প্রচারে নামানো যাচ্ছে না। কোথাও লাগেনি একটি ঝান্ডাও। দেখা যাক, শেষ অবধি কি হয়।’
রহেন, সন্তোষরা আগেই সাংগঠনিক বৈঠকে জানিয়ে ছিলেন জন বারলাকে ভােলা কোনও পদ দিতে হবে। পাশাপাশি বিজেপির নির্বাচনি ইস্তাহারে রাখতে হবে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, অবসরের বয়স ৫৮ থেকে বাড়িয়ে ৬০ বছর করা, শ্রমিকদের বকেয়া পিএফ সংশ্লিষ্ট মালিকদের কাছ থেকে আদায়ে পদক্ষেপ, বন্ধ বাগান খোলা, চা শ্রমিকদের জমির পূর্ণ অধিকারের প্রতিশ্রুতি। বিজেপি যদি সংগঠনের দাবিগুলি মেনে নেয় তবেই তাঁরা নির্বাচনে পাশে থাকবে।
এ প্রসঙ্গে নাগরাকাটার বিধায়ক পুনা ভেংরা বলেন, ‘আগের বারের থেকেও এবারের নির্বাচনে আমরা আরও বেশি ভোটে জিততে চলেছি। দলে কোথাও কোনও সমস্যা নেই। মেরিনাদিদি, সন্তোষ ও রহেনবাবুদের সম্মান করি। তাঁরা যদি কোথাও ব্যক্তিগতভাবে কিছু বলেও থাকেন তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’