শুভদীপ শর্মা, লাটাগুড়ি: কাঁঠাল পাকতেই বিপদের মুখে গরুমারা জঙ্গল (Gorumara National Park) লাগোয়া বিভিন্ন বনবস্তিবাসীরা। প্রায় প্রতি রাতেই পাকা কাঁঠালের লোভে লোকালয়ে হানা দিচ্ছে দঁাতাল (Elephant)। কখনও দলবেঁধে আবার কখনও একাই এসে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। একের পর এক কঁাঠাল গাছ সাবাড় করছে। আর কখনও কঁাঠাল না পেয়ে হামলা চালায় বসতবাড়ি, রিসর্টে। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সময় মানুষ-হাতি সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উত্তরবঙ্গ বন্যপ্রাণী বিভাগের বনপাল ভাস্কর জেভির কথায়, ‘কাঁঠাল হাতিদের অত্যন্ত প্রিয় খাবার। এই সময় বন দপ্তরের বাড়তি নজরদারি থাকে। গ্রামবাসীদেরও সতর্ক থাকতে হবে।’
প্রতিবছরের মতো এবারও বর্ষায় কাঁঠাল পাকতেই জঙ্গল ছেড়ে গ্রামমুখো হয়েছে হাতির দল। জঙ্গলের গাছপালা লতাপাতা বাদ দিয়ে কঁাঠালে মজেছে তারা। সপ্তাহখানেক ধরে গরুমারা জঙ্গল লাগোয়া বিচারভাঙ্গা সরস্বতী বনবস্তির পাশাপাশি লাটাগুড়ির বাজার লাগোয়া নতুনপাড়াতেও একাধিকবার হাতি হানা দিয়েছে। গত সোমবার ভোরে নতুনপাড়ার স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন ঘোষের বাড়িতে ঢুকে ভাঙচুর চালায় হাতি। এরপর গাছের বেশিরভাগ কঁাঠাল সাবাড় করে। প্রতিবেশীরা চিৎকার করলে হাতিটি জঙ্গলে চলে যায়। সরস্বতী বনবস্তির বাসিন্দা রেতি ওরাওঁয়ের কথায়, ‘এটা কোনও নতুন ঘটনা নয়। তবে চলতি বছর কঁাঠালের লোভে এলাকায় হাতির আনাগোনা বেড়েছে। প্রায় প্রতি রাতেই হাতি এসে কঁাঠাল খাওয়ার পাশাপাশি বাড়িতে ভাঙচুর চালাচ্ছে। আতঙ্কে আছি আমরা।’ একই কথা বলেন নতুনপাড়ার বাসিন্দা দিব্যেন্দু দেব।
বুধবারও হাতি লাটাগুড়ি বাজার লাগোয়া একটি বেসরকারি রিসর্টে ঢুকে কঁাঠাল খেয়ে চলে যায়। বিশিষ্ট হস্তীবিশারদ তথা পদ্মশ্রী পার্বতী বড়ুয়া বলেন, ‘কাঁঠাল হাতিদের বরাবরই প্রিয়। গ্রামের লোকেদের সচেতন থাকতে হবে।’ লাটাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান কবিতা সেন বলেন, গত কয়েকদিনের মধ্যে এলাকার বহু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দলবেঁধে এলে হাতিদের তাড়ানো মুশকিল হয়ে যায়।’