শামুকতলা: পাঁচদিন আগে গ্যাসের সিলিন্ডার বুক করেছিলেন কামাখ্যাগুড়ির নিতাই বিশ্বাস। এখনও বাড়িতে কোনও সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়া হয়নি। তাঁর কথায়, ‘কয়েকমাস আগেও বুক করার দু’দিনের মধ্যে গ্যাস এসে যেত। এবার পাঁচদিন কেটে গিয়েছে। গ্যাসের দোকানে ফোন করেছিলাম। বলল, সোমবারের মধ্যে সিলিন্ডার চলে আসবে।’ আগে যেখানে দুই থেকে তিনদিনের মধ্যে গ্যাস মিলত। এখন সেখানে সাতদিন বা তারও বেশিদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে গ্রাহকদের। এই মুহূর্তে এই সমস্যায় পড়েছেন জেলার বিভিন্ন এলাকার গ্রাহকরাই।
আলিপুরদুয়ার জেলাজুড়ে মূলত ইন্ডিয়ান অয়েলের গ্যাস সরবরাহ হয়। সেজন্য ব্লকে ব্লকে গ্যাসের দোকানও খোলা রয়েছে। কিন্তু এর পরেও সঠিকভাবে গ্যাস মিলছে না বলে অভিযোগ। কিন্তু হঠাৎ এই গ্যাস সিলিন্ডারের ঘাটতি হওয়ার কারণ কী? গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার কর্তারা খোলসা করে কিছুই বলছেন না। তবে জানা গিয়েছে, কম জোগানই মূল কারণ। জেলার গ্যাসের দোকানগুলিতে জলপাইগুড়ি রানিনগর প্ল্যান্ট থেকে গ্যাসের সিলিন্ডার আসে। বর্তমানে অসম এবং মালদার প্ল্যান্টে সংস্কারের কাজ চলছে। ফলে সেখানে রান্নার গ্যাস পাঠাতে হচ্ছে এই প্ল্যান্ট থেকে। এতে রান্নার গ্যাসের ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, জেলায় আগে প্রতিদিনই এক লরি করে গ্যাস সিলিন্ডার আসত। এখন সেখানে শহর এলাকাগুলোতে কিছুটা বেশি মিললেও, গ্রামের দিকে গ্যাসের দোকানগুলিতে সপ্তাহে দু’-একটা গাড়িই আসছে। জেলার এক রান্নার গ্যাসের ডিলারও একই কথা জানান। তবে দু’-একদিনের মধ্যে এই সমস্যা মিটে যাবে বলে গ্যাস সরবরাহকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে। শামুকতলা, তুরতুরি সহ বিভিন্ন এলাকায় রান্নার গ্যাস ফোন করে বুক করার পর সঠিক সময় মিলছে না বলে অভিযোগ।
ময়নাবাড়ির গ্রাহক মিনা ছেত্রীর অভিযোগ, ‘গ্যাস বুক করার পরেও গ্যাস পাচ্ছি না। তাই জ্বালানি কাঠ জোগাড় করে রান্নার কাজ করতে হচ্ছে। এদিন গ্যাসের দোকানে ফোন করেছিলাম, তারা জানিয়েছে, রবিবার আমার বাড়িতে গ্যাস পৌঁছাবে।’
গ্যাসের এজেন্সিগুলির আবার দাবি, উজ্জ্বলা কানেকশনে ভরতুকি ঘোষণা হওয়ার পর চাহিদা বেড়েছে। শীতে গ্রামীণ এলাকাগুলিতে বাড়ির পাশাপাশি অন্যান্য কাজে রান্নার গ্যাস ব্যবহার করা, বনভোজন সহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান বেড়ে যাওয়ায় চাহিদাও বাড়ে। সেটাও ঘাটতি হওয়ার কারণ।
ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারের ফিল্ড অফিসার এহেসান হাবিব সরকার বলেন, ‘আগের তুলনায় অবশ্য এখন অনেকটাই সমস্যা কম রয়েছে। গ্যাসের প্ল্যান্টে রবিবার ছুটির দিনেও কাজ চলছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।’