উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ এক সময় যার নাম শুনলে থর থর করে কাঁপত জঙ্গলমহল, সেই মাওবাদী কমান্ডারের স্ত্রী এবার তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন পঞ্চায়েত ভোটে। স্ত্রীকে জেতাতে প্রচারে নেমেছেন মাওবাদীদের প্রাক্তন কমান্ডার আনন্দ কুমার ওরফে নন্দ। মাও স্কোয়াড থেকে বেরিয়ে এসে আনন্দ নতুনভাবে জীবন শুরু করেন। এখন তিনি রাজ্য সরকারের অধীনে হোম গার্ড পদে কর্মরত। মাওবাদীদের প্রাক্তন কমান্ডারের স্ত্রীর এমনভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে আশায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গেছে।
বাম আমলে মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি ছিল বলরামপুর। এই বলরামপুর থেকেই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রার্থী হয়েছেন তনুজা কুমার। তনুজা মাওবাদীদের প্রাক্তন কমান্ডার আনন্দ কুমার ওরফে নন্দর স্ত্রী। বলরামপুর ব্লকের ঘাটবেড়া-কেরোয়া গ্রামের বাসিন্দা আনন্দ কুমার। তিনি ছিলেন মাওবাদীদের অযোধ্যা স্কোয়াডের এরিয়া কমিটির কমান্ডার। আনন্দ কুমারের নামে বাংলা, ঝাড়খণ্ড মিলিয়ে ১৯ টি মামলা চলছিল। তাঁর নাম শুনলেই ভয়ে কাঁপত জঙ্গলমহলের মানুষ। রাজ্যে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর অনেকেই মাও সংগঠন থেকে বেরিয়ে মূলস্রোতে ফিরেছিলেন। তাদের মধ্যেই একজন আনন্দ কুমার।
স্ত্রী তনুজাকে জেতাতে ভোটের প্রচারের দেখা যাচ্ছে আনন্দ কুমারকে। তিনি জানান, ‘এই প্রথমবার সক্রিয় রাজনীতিতে নেমেছে স্ত্রী তনুজা। তাই জিত নিশ্চিত করতে স্ত্রীয়ের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি। মানুষ আমাদের পাশে রয়েছে, নিশ্চই জিতবে তনুজা।’
তনুজা জানান, ‘বাম আমলে সময় বলরামপুরের তেমন উন্নয়ন দেখা যায়নি। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আসার পর পরিস্থিতির অনেকটাই বদলেছে। এলাকার মানুষের অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে। মানুষ সাড়া পাচ্ছি। তাই জয় নিয়েও নিশ্চিত রয়েছি।’
এক সময় ভোট এলেই জঙ্গলমহলে অঞ্চলে বয়কটের ডাক দিত মাওবাদীরা। গ্রামগুলির বাড়ির দেওয়ালে দেওয়ালে সাদা কাগজের উপর লাল কালির দিয়ে লেখা পোস্টারে থাকত ভোট বয়কটের ডাক। কিন্তু সরকার বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে ছবি তাই পাল্টে গিয়েছে। এখন আর এই এলাকায় নেই মাওবাদীদের উপদ্রব। সন্ধে নামলেই এখন আর জনশূন্য হয়ে যায় না পথঘাট। চলে না হত্যালীলা। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা পেয়ে ধীরে ধীরে সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসতে শুরু করেন আনন্দর মতো বহু মাওনেতা।