ভাস্কর শর্মা, ফালাকাটা: রাজ্যজুড়ে একশো দিনের বকেয়া টাকা মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার। ফালাকাটা (Falakata) ব্লকেও এই রকম শ্রমিকদের তথ্য যাচাই করা হচ্ছে। এই ব্লকে প্রায় ৫৬ হাজার শ্রমিকের প্রায় ৩৫ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে খবর। কিন্তু এই টাকা শুধু গ্রামীণ এলাকার নয়, পুর এলাকার শ্রমিক যাঁরা সেসময় কাজ করেছেন, তাঁরাও টাকা পাবেন। পুর এলাকার সাতশোরও বেশি শ্রমিক একশো দিনের বকেয়া টাকা পাবেন। টাকা পেলেও তাঁদের দাবি, এবার বিকল্প কাজের ব্যবস্থা করা হোক।
শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রমিক দিলু বর্মন বলেন, ‘দু’বছর আগের টাকা পাব, এটা জেনে ভালো লাগছে। কিন্তু আমরা চাই সারাবছর কাজ। দু’বছর ধরে সরকারি কাজ বন্ধ। পুরসভার তরফে আমাদের কাজের ব্যবস্থা করে দিলে খুব উপকার হয়।’
ফালাকাটা ব্লকে প্রায় ৫৬ হাজার শ্রমিক পরিবারের জব কার্ড আছে। এর মধ্যে পুরসভায় সাতশোরও বেশি জব কার্ডধারী ছিলেন। সবাই যদিও সক্রিয়ভাবে কাজ করতেন না। কিন্তু দু’বছর আগে ফালাকাটা পুরসভা (Falakata Municipality) হওয়ার পর তাঁদের কাজ চলে যায়। গ্রামীণ এলাকাতেও ২ বছরের উপরে হয়ে গেল শ্রমিকদের কাজের মজুরি বকেয়া। এই অবস্থায় রাজ্য সরকার শ্রমিকদের বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। শিবির করে চলছে নথিপত্র যাচাই। ফালাকাটার বিডিও অনীক রায় বলেন, ‘রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী বকেয়া মেটানোর প্রক্রিয়া চলছে। ব্লকে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা বকেয়া। এর মধ্যে শহর এলাকার শ্রমিকারও রয়েছেন।’
গ্রামের তকমা ঘুচিয়ে শহরে উন্নীত হয়েছে ফালাকাটা। কিন্তু তারপরেই কাজ হারান শহর এলাকার শ্রমিকরা (Workers)। প্রায় ২ বছর ধরে কাজ না পেয়ে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছিল তাঁদের। ইতিমধ্যে পুরসভা কয়েকজন শ্রমিককে কাজের সুযোগ করে দেয়। কিন্তু অনেকেই পাননি। তাঁদের মধ্যে একজন সুজয় রায়। একসময় একশো দিনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা ওই শ্রমিক বলেন, ‘ফালাকাটা পুরসভা হওয়ার পর কাজ চলে যায়। পরে কয়েকজন কাজ পেলেও আমরা পাইনি। তাই পুরসভা যাতে আমাদের সবার কাজের ব্যবস্থা করেন তার জন্য চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করব।’ এবার তাই বকেয়া মেটানোর সম্ভাবনা তৈরি হওয়ায় বিকল্প কাজের সুযোগ চাইছেন শ্রমিকরা। কারণ শুধু বকেয়া টাকা দিয়ে হয়তো কয়েকমাসের গুজরান হবে। বছরের বাকি সময়টাও যাতে সংসার চালাতে সমস্যা না হয়, সেটাই চাইছেন তাঁরা।