হেমতাবাদ: পায়ে লোহার বেড়ি, মুখে নিষ্প্রভ হাসি। অবুঝের মতো মাটির বাড়ির বারান্দা আঁকড়ে টানা ১২ বছর ধরে শেকলবন্দি কিশোর। হেমতাবাদ থানার বাঙালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের নইসরা গ্রামের মানসিক ভারসাম্যহীন ১৩ বছরের নুর আরফিন বাইরের জগৎ থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন। স্বল্প পরিসরের মলিন বারান্দায় ধাতব শেকলে বন্দি তাঁর জীবন। লেখাপড়া তো দূরের কথা, হেমতাবাদ ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে কোনও খোঁজখবর নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ পরিবারের।
মা নুরবানু খাতুন বলেন, ‘মাঝেমধ্যেই শেকল ছিড়ে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকায় চলে যায়। দু’তিন দিন পর হদিস পেয়ে নিয়ে আসা হয় ছেলেকে। সেই কারণেই পায়ে বেড়ি পরিয়ে শেকলবন্দি করে রাখি। আমরা দিন আনি দিন খাই। মানুষের জমিতে কাজ করে খাবো নাকি ছেলের চিকিৎসা করাবো?‘
কিশোরের দিনমজুর বাবা তৈমুল রহমান বলেন, ‘চিকিৎসার জন্য একবার তৎকালীন রায়গঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এরপর কিছুই হয়নি।‘ ছেলের এহেন অবস্থায় রীতিমতো উদ্বেগে পরিবার। কোনও সহৃদয় ব্যক্তি ছেলের চিকিৎসার দায়িত্ব নিলে উপকৃত হবেন। বাঙালবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা রিক্তা রায় বলেন, ’শেকলবন্দি নাবালক যাতে সরকারি পরিষেবার আওতায় আসে, তার যথাসাধ্য চেষ্টা করা হবে। সম্প্রতি পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। সদস্যা হওয়ার বেশিদিন হয়নি তবুও ওই কিশোরের জন্য যতটা সম্ভব কাজ করার চেষ্টা করব।