বালুরঘাট: দক্ষিণ দিনাজপুর ফিল্ম ও ফটোগ্রাফি ক্লাবের উদ্যোগে সপ্তম ইমাজিনিয়ায় আয়োজিত আন্তর্জাতিক ছবি উৎসবে ভিড় জমাল আট থেকে আশি। দুপুর থেকে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত পর্যন্ত ছবিপ্রেমী মানুষরা পুরো পার্ক ঘুরে ঘুরে ছবি দেখছেন। অনেকেই পকেট থেকে মোবাইল বের করে পছন্দের ছবি ক্যামেরাবন্দি করে নিচ্ছেন। ছবির সামনে দাঁড়িয়ে অনেকেই সেলফি তুলে নিচ্ছেন। ফটোগ্রাফারদের সঠিক ফ্রেম ও জাদু হাতের ক্লিক এখন ছেয়ে রয়েছে বালুরঘাট সুরেশরঞ্জন পার্কে।
আগামী রবিবার পর্যন্ত এই ছবির উৎসব চলবে। যেখানে একদিকে কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া নিজস্বী প্রতিযোগিতার ছবি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, বালুরঘাট হাইস্কুলে তৈরি হওয়া ফটোগ্রাফি ক্লাবের কর্নার রয়েছে। একদিকে সারিবদ্ধ ভাবে শুধু রাখা হয়েছে সাদাকালো ছবি। পার্কের ঘাসের উপরে রাখা হয়েছে ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফি। তাছাড়াও ল্যান্ডস্কেপ, স্ট্রিট ফটোগ্রাফিও রয়েছে। মূল মঞ্চে প্রতিদিনই অনুষ্ঠান চলবে। যা আলপনা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে।
খিদিরপুরের ফটোগ্রাফি শিল্পী বিদিপ্তা দাস জানান, ‘বালুরঘাট তথা আমাদের জেলায় বরাবরই সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষের বসবাস। আলোকচিত্র যে সংস্কৃতির অঙ্গ হতে পারে সাধারণ মানুষ তা বুঝিয়ে দিল। প্রবেশ অবাধ থাকায় দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত প্রচুর মানুষ ছবি দেখতে আসছেন। আমি ট্রাভেল ফটোগ্রাফি করতে ভালোবাসি। ছয় বছর ধরে ছবি তুলছি। এর আগে কলকাতা ও সিম্ফনি ম্যাগাজিনে আমার ওয়াইল্ড লাইফ ছবি প্রদর্শিত হয়েছে।
বট তলার গৃহবধূ সুদীপ্তা রায় বলেন, ‘ক্যামেরা ও মোবাইল লেন্সের মাধ্যমে যে এমন সব কেরামতি করা যায়। তা এখানে না আসলে বুঝতেই পারতাম না। অভিভাবকরা সন্তানদের এই ছবি প্রদর্শনী উৎসবে নিয়ে আসা উচিত। তারা যেন ছোটদের এই বিষয়ে উৎসাহিত করে তোলেন। এমন নান্দনিক শিল্প বেশি করে সকলের সামনে উঠে আসা উচিত। এখানে রাজ্যের, দেশের এমনকি বিদেশেরও একাধিক ছবির দেখা মিলছে। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে এই উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে।’
প্রাথমিক শিক্ষিক সমর সরকারের মতে, ‘এখন তো নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা মোবাইল হাতে নিয়ে বসে থাকে। কিন্তু সেই মোবাইলের ক্যামেরা দিয়েই যে এইভাবে প্রকৃতি ও পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতিকে তুলে ধরা যায়। তা এখানে এসে জানলাম। প্রযুক্তির ভাল দিকটা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে এই শিল্পীরা ভেবে ভাল লাগছে। এখানে বিভিন্ন আঙ্গিকের ও পরিস্থিতির ছবি উঠে এসেছে। যা দেখে আমার মতোই সকল দর্শক মুগ্ধ হতে বাধ্য।’ উদ্যোক্তা ঋত্বিক সাহা জানান, ‘এই পার্ক ব্যবহার করার জন্য বালুরঘাট পুরসভার প্রধান অশোক মিত্রকে ধন্যবাদ জানাই। তার সঙ্গে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে উত্তরবঙ্গ সংবাদকে পেয়ে আমরা ধন্য।’