শিলিগুড়ি: শহর আধুনিক হয়েছে। তবে পণ প্রথা কি দূর হয়েছে? উত্তরটা বোধহয় ‘না’। শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটন পুলিশের মহিলা থানায় শুধুমাত্র ১ এপ্রিল থেকে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ১০টি পণ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রতিটা ক্ষেত্রেই পারিবারিক অত্যাচারের বিষয় যেমন সামনে এসেছে, তেমনি যুক্ত হয়েছে ‘পণ’ শব্দটাও। অবাক ব্যাপার, এই ধরণের অভিযোগগুলো অধিকাংশই এসেছে শহরের তথাকথিত অভিজাত এলাকা থেকে।
শুধু পণই নয়, আর একটা ব্যাপারও যথেষ্ট আশঙ্কার। সেটা হল, বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই অশান্তি দেখা দিচ্ছে দম্পতির মধ্যে। অনেক ক্ষেত্রে ভালোবাসা করে বিয়ে করার পরেও বদলে যাচ্ছে কাছের মানুষ। চলতি মাসের ৪ তারিখের একটি অভিযোগে জানা গেছে, অভিযোগকারিণীর সঙ্গে অভিযুক্তের ভালোবাসা করে মন্দিরে বিয়ে হয়েছিল। তাঁদের ছোট ছেলেও রয়েছে অথচ অভিযোগ, ভালোবাসার সেই মানুষটা বদলে গিয়েছে। পণের দাবিতে প্রায়দিনই অভিযোগকারির ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। গত মাসের ৫ তারিখের একটি অভিযোগে দেখা গিয়েছে, ভালোবাসার মানুষ এমনই মারধর করেছে যে অভিযোগকারিণী তিন দিন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আসলে সময়ের সঙ্গে পণের ধরণ বদলেছে, তবে পণ বন্ধ হয়নি, বলছিলেন শিলিগুড়ি কলেজের সমাজতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক অমল রায়। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মনোবিদ চিকিৎসক উত্তম মজুমদার জানান, ‘আসলে এই সামাজিক ব্যাধিটা দীর্ঘদিনের। মাঝে ভালোবেসে বিয়ে যখন শুরু হয়েছিল, তখন পণ প্রথায় কিছুটা প্রভাব পড়েছিল। তবে এখন দেখা যায়, ভালোবাসার বিয়েতেও পণ নেওয়া হচ্ছে। তবে আধুনিক এই সমাজে এমনও পরিবার রয়েছে, যারা পণ অগ্রাহ্য করেই ছেলের বিয়ে দিচ্ছে। এই মানসিকতা আজ বড় প্রয়োজন।’