উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ প্রায় ১৪ মাস ধরে ইউক্রেনে ধুঁকছে পুতিনের সেনা। আর এরই মাঝে রাশিয়ায় তৈরি হয়ে গিয়েছে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি। একসময় ইউক্রেন যুদ্ধের রণনীতি তৈরি করা হত দক্ষিণ রাশিয়ার যে অঞ্চল থেকে, সেই অঞ্চলই নাকি এবার হাতছাড়া হয়ে গিয়েছে ক্রেমলিনের। একদা ক্রেমলিন ঘনিষ্ঠ ওয়াগনার গোষ্ঠীই রুশ সেনার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে। পুতিন সরকার কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছে ওয়াগনার গোষ্ঠীকে। মামলা রুজু করা হয়েছে এই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে। ওয়াগনার গোষ্ঠী ও পুতিন গোষ্ঠীর মধ্যে এই দ্বন্দ্ব চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে।
Seizure of a building of the Russian Ministry of Defense in Rostov-on-Don. pic.twitter.com/9GEbCOvIxm
— NEXTA (@nexta_tv) June 24, 2023
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় বড় ভূমিকা পালন করেছিল এই ওয়াগনার গোষ্ঠী। শুধু ইউক্রেন নয়, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে রাশিয়ার হয়ে ‘ছায়া যুদ্ধ’ করত এই ভাড়াটে সৈনিকদের দল। তবে এখন তারা রুশ সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধেই সশস্ত্র বিদ্রোহের কথা ঘোষণা করেছে। এই আবহে দক্ষিণ রাশিয়ার সেনা দপ্তর থেকে পালিয়ে গিয়েছেন রুশ সেনার চিফ অফ জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ। এমনকি ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে। ইয়েভজেনি পুতিনকে রাশিয়া থেকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চাইছে। এই আবহে মস্কো এবং দক্ষিণ রাশিয়ার রস্টভ-অন-ডন শহরে বিশাল সংখ্যা রুশ সেনা এবং ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে ইয়েভজেনি দাবি করেছেন, তাঁর গোষ্ঠীর মোট ২৫ হাজার সৈনিক রয়েছে। তারা রুশ সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে।
কী কারণে ওয়াগনার গোষ্ঠীর এই বিদ্রোহ? ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান অভিযোগ করেন, তাঁর সৈনিকদের ক্যাম্পের ওপর ভয়াবহ মিসাইল হামলা চালায় রুশ সেনা। এতে তাঁর অনেক সৈনিক মারা যায়। ওয়াগনার গোষ্ঠীর কমান্ডারদের কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই দেশের শয়তান সামরিক নেতৃত্বকে খতম করা হবে। আমরা প্রায় ২৫ হাজার জন রয়েছি। এই বিশৃঙ্খলায় ইতি টানতে হবে আমাদের। এটা কোনও সামরিক অভ্যুত্থান নয়। এটা ন্যায়ের মিছিল।’ যদিও রাশিয়ার সেনাবাহিনীর তরফে এই মিসাইল হামলার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে।
রুশ গুপ্তচর সংস্থা এফএসবি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘ইয়েভজেনি সরাসরি সামরিক অভ্যুত্থানের ঘোষণা করেছেন। তিনি রাশিয়ার গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন। ইউক্রেনের ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকা আমাদের সৈনিকদের পিঠে ছুরিকাঘাত করেছেন ইয়েভজেনি।’ এদিকে ওয়াগনার গোষ্ঠীর সৈনিকদের উদ্দেশে এফএসবি বার্তা দিয়েছে, ইয়েভজেনিকে আটক করো।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এক অডিয়ো বার্তায় ইয়েভজেনিকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘ওয়াগনার গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনা। এর বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। কিছুক্ষণ আগেই রুশ সেনার একটি হেলিকপ্টার সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালাতে শুরু করেছিল। আমরা সেই হেলিকপ্টারটিকে ধ্বংস করেছি। আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব। আমরা এর শেষ দেখে ছাড়ব। আমাদের যারা আটকাতে আসবে, তাদের আমরা খতম করে দেব।’
১. ওয়াগনার গোষ্ঠীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন ঘোষণা করেছেন ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধে তাঁরা রাশিয়ার পতন সুনিশ্চিত করবেন। ফলে রাশিয়ার বেশ কয়েকটি অঞ্চলে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
২. লিপেটস্ক অঞ্চলের গভর্নর ইগর আর্টামনভ সকলকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।
৩. রোস্তভের দক্ষিণাঞ্চলে বাসিন্দাদের বাড়ি থেকে না বেরোনোর অনুরোধ জানানো হয়েছে।
৪. অন্যদিকে প্রিগোজিনও রাশিয়াকে অর্থাৎ পুতিনের বাহিনীকে ধ্বংস করার হুঙ্কার দিয়েছেন।
৫. প্রিগোজিন একটি অডিও বার্তায় জানান ওয়াগনার গোষ্ঠীর সেনারা দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্তভ শহরে প্রবেশ করেছে।
৬. পুতিনের নেতৃত্বকে অগ্রাহ্য করে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে যাওয়ার ঘোষণা করেছেন প্রিগোজিন।
৭. এর ফলে, রাশিয়ার এফএসবি সিকিউরিটি সার্ভিস একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে ওয়াগনার গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
৭. গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে ওয়াগনার গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে।
৮. ওয়াগনার গোষ্ঠীর এই মাথাচাড়া দেওয়ায় ইউক্রেন যুদ্ধে সাফল্য পাওয়া পুতিনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
৯. রাশিয়ার পুতিন বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার গুলি করে নামিয়েছে ওয়াগনার গোষ্ঠী, দাবি করেছেন প্রিগোজিন।
১০. ওয়াগনার গোষ্ঠীর ওপর নজর রাখার কাজ চালাচ্ছে পুতিনের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী। প্রতি মুহূর্তের খবর পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে পুতিনের কাছে।
Read more at: https://www.thewall.in/news/vladimir-putin-vs-wagner-mercenary/