রতুয়া ও মালদা: কয়লাকাণ্ডে এবার সিবিআইয়ের নজরে এক প্রাক্তন সিআইএসএফ আধিকারিক। রাজ্যজুড়ে তাঁর একাধিক ঠিকানায় এদিন তল্লাশি চালান সিবিআই আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে মালদা জেলার রতুয়া সহ একাধিক এলাকায় তাঁর বাড়ি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। এদিন সিবিআই আধিকারিকরা রতুয়ায় হানা দেন। সেখান থেকে মালদা শহরে হানা দেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা। বৃহষ্পতিবার দুপুর ২ টো ২০ মিনিট নাগাদ মালদা শহরের এক নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনি এলাকায় মধুবন্তী অ্যাপার্টমেন্টে হানা দেয় সিবিআই আধিকারিকরা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অ্যাপার্টমেন্টের তিনতলায় দুটি ফ্ল্যাট রয়েছে প্রাক্তন সিআইএসএফের জওয়ান শ্যামল শিংয়ের সেখানেই হানা দেন সিবিআই আধিকারিকরা। এছাড়া রতুয়ার কাহালার এলাকায় শ্যামল সিংয়ের বাড়িতেও হানা দেয় সিবিআই। একই সঙ্গে তাঁর কলকাতা ও আসানসোলের ঠিকানাতেও হানা দিয়েছে তদন্তকারীরা।
শ্যামল সিংয়ের বয়স ৫৭ বছর৷ তিনি আগে সিআইএসএফের জওয়ান ছিলেন৷ বছর সাতেক আগে অবসর নিয়েছেন৷ বর্তমানে জমির ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত৷ কাহালায় প্রাসাদোপম বাড়ি রয়েছে তাঁর৷ কলকাতার ভবানীপুর, আসানসোলের পুরাতন হাটেও তাঁর বাড়ি রয়েছে৷ মালদা শহরের ১ নম্বর গভর্নমেন্ট কলোনিতে রয়েছে তাঁর বিলাসবহুল ফ্ল্যাট৷ এদিন চার জায়গাতেই অভিযান চালায় সিবিআই৷ তবে ভবানীপুরের বাড়ি তালাবন্ধ থাকায় সেখানে সিবিআই আধিকারিকরা ঢুকতে পারেননি৷
এদিন সকাল আটটা নাগাদ কাহালার বাড়িতে হানা দেয় চার সদস্যের সিবিআইয়ের দলটি৷ তখন শ্যামল সিং ওই বাড়িতেই ছিলেন৷ আগামীকাল তাঁর ভাইঝির বিয়ে৷ বাড়ি সাজানো চলছে৷ বিয়ে উপলক্ষ্যে ক’দিন আগে পরিবার নিয়ে তিনি বাড়ি ফিরেছেন৷ সিবিআই আধিকারিকরা বাড়িতে ঢুকেই সবার মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে তল্লাশি শুরু করেন। বেলা ১২টা পর্যন্ত চলে সেই অভিযান৷ এই সময় ওই বাড়িতে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি৷ বেরোতেও দেওয়া হয়নি। বেলা ১২টা ৩ মিনিট নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন সিবিআই আধিকারিকরা৷ তাঁদের হাতে লাল শালুতে মোড়া একটি প্যাকেট দেখা যায়৷ প্রায় ৪৫ মিনিট পর আবর সিবিআই আধিকারিকরা ফিরে আসেন৷ আবারও বাড়ির ভিতরে ঢোকেন৷ মিনিট পাঁচেক পর শ্যামলবাবুর গাড়ির চালককে নিয়ে তাঁরা বাইরে এসে ওই চালককে নিয়েই মালদা শহরের দিকে চলে যান৷ তবে সিবিআইয়ের হানাদারির কথা জানা ছিল না পুলিশেরও৷ তল্লাশি শুরু হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পর শ্যামল সিংয়ের বাড়িতে উপস্থিত হয় রতুয়া থানার পুলিশ৷ এই ঘটনা নিয়ে পুলিশ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি৷ সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেননি সিবিআই আধিকারিকরাও৷ অদ্ভুতভাবে মুখে কুলুপ গ্রামবাসীদেরও৷ কেউই সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে রাজি নয়৷ অনেক চেষ্টার পর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানালেন, সিআইএসএফ জওয়ান থাকাকালীন শ্যামলবাবু আসানসোলে পোস্টিং ছিলেন৷ সেখানে কোল ইন্ডিয়ার কোনও আধিকারিকের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী হিসাবে কাজ করতেন৷ তখন থেকেই তিনি ফুলেফেঁপে ওঠেন তিনি৷ ২০০০ সালের পর থেকে তিনি প্রচুর সম্পত্তির মালিক হন৷ শুধুমাত্র রতুয়াতেই তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে সূত্রের খবর৷