কিশনগঞ্জঃ টেস্ট টিউব বেবির প্রলোভন দেখিয়ে দুই সন্তানহীনার কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কিশনগঞ্জের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে কিশনগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতারিতরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি কিশনগঞ্জ শহরের হাসপাতাল রোডের এক আইভিএফ সেন্টারের। অভিযুক্ত মহিলা চিকিৎসকের নাম তারাশ্বেতা আর্য। জানা গিয়েছে, কিশনগঞ্জ থানার অধীন বেলুয়ার বাসিন্দা এক দম্পতি বিয়ের নয় বছর পরেও সন্তান না হওয়ায় কিশনগঞ্জের হাসপাতাল রোডের আইবিএফ সেন্টারে গিয়েছিলেন সন্তানের আশায়। সেই সেন্টারের চিকিৎসক ডাঃ তারাশ্বেতা তাঁদের টেস্ট টিউব বেবি নেওয়ার পরামর্শ দেন। সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান দম্পতি। টেস্ট টিউব বেবির জন্য চিকিৎসক তাঁদের সঙ্গে ৫ লক্ষ টাকার কথা হলেও পরে বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে মোট ৮ লক্ষ টাকা নিয়ে নেন বলে অভিযোগ।
গত ৫ সেপ্টেম্বর ফের দম্পতির কাছ থেকে আইভিএফ সেন্টারের নামে দেড় লক্ষ টাকা দাবি করেন চিকিৎসক তারাশ্বেতা। সেই টাকাও তারা প্রদান করেন সেন্টারকে। পরবর্তীতে আইভিএফ সেন্টার থেকে তাঁদের জানানো হয় গর্ভধারণ করেছেন সন্তানহীনা মহিলা। এর জন্য আরও বেশ কিছু টেস্টের প্রয়োজন। সেই জন্য আরও ৯০ হাজার টাকা দাবি করা হয়। মহিলা আদৌ গর্ভধারণ করেছেন কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য অন্য জায়গায় আলট্রা সোনোগ্রাফি করান হয়। সেখান থেকে তাঁদের জানানো হয় গর্ভধারণ করেননি মহিলা। সেই রিপোর্ট নিয়ে দম্পতি যান চিকিৎসক তারাশ্বেতার কাছে। তখন উনি বলেন ‘আইভিএফ ফেল হয়ে গেছে। আমি আবার চেষ্টা করব। তবে এই বাবদ আরও পাঁচ লাখ টাকা দিতে হবে’। এরপরই দম্পতি জানিয়ে দেন আর কোনও টাকা তারা দিতে পারবেন না। এরপরই চিকিৎসক তারাশ্বেতা আইভিএফ সেন্টারের নিরাপত্তারক্ষীদের দিয়ে বলপূর্বক দুজনকে বের করে দেন বলেও অভিযোগ করেন দম্পতি।
শুধু এই দম্পতিই নয়, টেস্ট টিউব বেবি দেওয়ার নাম করে কোচাধামন এলাকায় হিম্মতনগরের বাসিন্দা আরও দম্পতির কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে চিকিৎসক তারাশ্বেতার বিরুদ্ধে। এই দম্পতির কাছ থেকে ১১ লক্ষ টাকা প্রতারনা করেছেন বলে অভিযোগ। এই দুটি ঘটনাতেই অভিযোগ দায়ের হয়েছে কিশনগঞ্জ ও কোচাধামন থানায়। এই দুই দম্পতি বিচারের আশায় শরণাপন্ন হয়েছেন কিশনগঞ্জ পুলিশ সুপার ডঃ এনামুল হকের।
পুলিশ সুপার জানান, ‘দুইজন সন্তানহীনা মহিলার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে অভিযোগের তদন্ত করা হবে। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ২০ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ প্রমান হলে অভিযুক্ত চিকিৎসক কঠোর সাজা পাবেন। ’এই অভিযোগ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত চিকিৎসক তারাশ্বেতার কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।