উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হিংসা-অশান্তির অভিযোগ শুনতে রাজভবনে খোলা হয়েছে পিস রুম। ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকছে পিস রুমের কন্ট্রোল বিভাগ। ফোন ও ইমেল মারফৎ দিনরাত পিস রুমে আসছে নানান অশান্তির খবর। সিংহভাগ ফোনই বিরোধীদের। সূত্রের খবর, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিরোধীরা অভিযোগ করছেন, মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে তাঁদের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে শাসকদল।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপর্বে উত্তপ্ত হয়েছিল বাংলার একাধিক জেলা। সব হিংসাকেই ছাড়িয়ে যায় ভাঙড়ের মনোনয়ন। এখানে মনোনয়নকে ঘিরে অশান্তি, হিংসা, গুলিচালনা, মুহুর্মুহু বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরই এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। তিনি সরেজমিনে বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন। এরপর গত বৃহস্পতিবারই রাজভবনের তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, হিংসার অভিযোগ শোনার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হচ্ছে।
সোমবার সকালে পিস রুম কেমন কাজকর্ম চলছে, তা খতিয়ে দেখতে সেখানে আসেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। কর্তব্যরত ওএসডি-র সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করতে প্রশাসন বদ্ধপরিকর বলে জানান রাজ্যপাল। এদিন বেলা ১২ টা পর্যন্ত চারশতাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে রাজভবনের পিস রুমে।
জানা গিয়েছে, রাজভবনের পিস রুমের দায়িত্বে রয়েছেন খোদ ওএসডি সন্দীপ সিং, রয়েছেন রাজভবনের অন্যান্য কর্মীরা। পিস রুমে দিনরাত ‘ল্যান্ড ফোনে’ একের পর এক কল ঢুকছে। সামনে রাখা ল্যাপটপ। কর্মীরা ফোন তুলছেন, মিনিট খানেকের কথোপকথন। নাম ঠিকানা অভিযোগ শুনে তা নথিবদ্ধ করে রাখছেন।
রাজভবনের পিস রুমের কর্মীর জানান, ফোন সর্বক্ষণ খোলা। সক্রিয় মেইল আইডিও। সেখানে মেইল করেও অভিযোগ জানানো যাবে। প্রচুর মেইল আসছে। অভিযোগ নোট করে পাঠানো হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ভাঙড়, ক্যানিং, মুর্শিদাবাদ থেকে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে বলে জানান তিনি। বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের তরফ থেকে অভিযোগ জমা পড়ছে।
সোমবার ভোর রাতে মালদহের ইংরেজবাজারে বাঁশ দিয়ে পেটাতে পেটাতে বিজেপি প্রার্থীর ভাইকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র বলেন, “রাজ্যে তো আইন শৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। এতগুলো গ্রামের লোক আজকে সকাল থেকে পুলিশকে ফোন করছে। পুলিশের কোনও জবাব নেই। আমি নিজে ডিএম-কে ফোন করছি, ডিএমের জবাব নেই। মেসেজ করলেও কোনও জবাব মিলছে না। এই তো অবস্থা। আমাকে বাধ্য হয়ে রাজভবনে জানাতে হল। রাজ্যপালকেও ভোর সাড়ে পাঁচটায় জানিয়েছি। লিখিতও দেওয়া হয়েছে। নিশ্চয়ই সেখান থেকে কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও এখনও পর্যন্ত কোনও পুলিশ পৌঁছল না।”