অভিজিৎ ঘোষ, সোনাপুর: শিবরাত্রিতে আলিপুরদুয়ার জেলাজুড়ে নানা মন্দিরের ভিতর-বাইরে মহিলাদের লম্বা লাইন। কারণ, সবাই দেবাদিদেবের মাথায় জল ঢেলে তুষ্ট করতে চান। আলিপুরদুয়ার-১ নম্বর ব্লকের মথুরাও এর ব্যতিক্রম নয়। মথুরা চা বাগানের ভিতর রয়েছে শতবর্ষ প্রাচীন এক শিব মন্দির। শনিবার ভোর থেকে সেখানে পুণ্যার্থীদের সারিবদ্ধ ভিড় নজর কেড়েছে। কিন্তু অন্য ছবিও নজরে এসেছে। যা রীতিমতো কলঙ্কিত করেছে এই মহাপুণ্য তিথিকে। মথুরা শিব মন্দিরের পাশে হাটখোলার মেলায় এদিন দিনদুপুরেই বসে গেল জুয়ার আসর। এনিয়ে সবাই নিন্দায় সরব হলেও নির্বিকার মেলার উদ্যোক্তা ও প্রশাসন।
শিবরাত্রির আগের দিন অর্থাৎ গত শুক্রবার থেকে মথুরা হাটখোলায় মেলা শুরু হয়েছে। মূলত শিবপুজো ঘিরেই এই মেলার আয়োজন। মথুরা ক্যান্টিন মাঠে আর একটি মেলা শুরু হয়েছে। দু’ক্ষেত্রেই শুক্রবার রাতেও জুয়ার আসর বসে বলে অভিযোগ। শনিবার দিনদুপুরে মথুরা হাটের মাংস হাটের পাশেই জুয়ার (Gambling) আসর দেখা গিয়েছে। সেখানে সব মিলিয়ে প্রায় ২০টি বোর্ড বসেছিল। যেখানে বল, বোর্ড, চরকি সব ধরনের জুয়াই ছিল। বড় জুয়ার বোর্ডগুলি আবার কাপড় দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। বহু মানুষ শুধুমাত্র জুয়া খেলতেই এই মেলায় আসেন বলে খবর।
বহু গ্রামীণ মেলায় এমন জুয়ার আসর নজরে পড়ে। উদ্যোক্তাদের বড় অঙ্কের টাকা দিয়ে বোর্ড বসানো হয় বলে জুয়া কারবারিদের একাংশের দাবি। জমজমাট মেলায় ভাগ্য (Luck) পরীক্ষা করতে ভিড় জমান বহু গ্রামবাসী। তবে প্রকাশ্য দিনদুপুরে এমন জুয়ার আসর নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। এদিন মেলার ভিতর পুলিশ থাকলেও জুয়ার আসরগুলির ধারেকাছে তাদের দেখা যায়নি। মেলায় পুলিশের চোখের সামনে এমন জুয়া খেলা চলায় অনেকেই বিস্মিত। যদিও পুলিশের দাবি, মেলাগুলিতে লাগাতার পুলিশি টহল চলেছে। সেখানে প্রকাশ্যে জুয়ার বোর্ড চলার কোনও অভিযোগ মেলেনি। মেলায় পুলিশের গাড়িও রয়েছে। তবে চুপেচাপে এসব হচ্ছে কি না তার খোঁজখবর নেওয়া হবে। উল্লেখ্য, শুক্রবার রাতে মথুরা শিব মন্দিরে এসেছিলেন আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি মনোরঞ্জন দে, আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের বিডিও (BDO) জয়ন্ত রায়, সোনাপুর ফাঁড়ির ওসি অমিত শর্মা প্রমুখ। তাঁরা মন্দির চত্বর ঘুরে দেখেন ও দেবতাকে শ্রদ্ধা জানান।