নাগরাকাটা: চা বাগানের অব্যবহৃত বা উদ্বৃত্ত জমিতে অবসরপ্রাপ্ত, অবসরের দোড়গোড়ায় কিংবা দীর্ঘদিন ধরে বাগানে বসবাসকারী শ্রমিকদের ৫ ডেসিমেল করে জমির পাট্টা প্রদানের সরকারি বিজ্ঞপ্তির বিরোধিতায় এবার আন্দোলন শুরু হল ডুয়ার্সেও।
সোমবার জমি ইস্যুতে নাগরাকাটার আদিবাসী সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রে ১৫টি আদিবাসী সংগঠনের যৌথ মঞ্চ ডুয়ার্স-তরাই আদিবাসী ইউনাইটেড ফোরামের একটি বৈঠক হয়। গত ১ অগাস্ট জারি হওয়া ভূমি ও ভূমি সংস্কার এবং উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দপ্তরের বিজ্ঞপ্তির ওপর আলোচনা হয় বৈঠকে। সেখানে দাবি উঠেছে, চা শ্রমিকরা বংশপরম্পরায় বাগানের যে জমিতে বসবাস করে আসছেন সেই পুরো জমির পাট্টাই তাঁদের দিতে হবে। এই দাবিতে পুজোর পর ডুয়ার্সের ৪টি স্থানে বড় মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। আগামী ৩ নভেম্বর কুমারগ্রাম ব্লকে মিছিল হবে। ৭ তারিখে মিছিল হবে কালচিনিতে। এরপর ধাপে ধাপে মাদারিহাট, বানারহাট, নাগরাকাটা, মেটেলি, মালবাজার ব্লকে তা অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বরে জলপাইগুড়ি শহরে গিয়ে চা বাগানের বাসিন্দারা মিছিল করে ডিভিশনাল কমিশনারের কাছে তাঁদের বক্তব্য পেশ করবেন।
ডুয়ার্স-তরাই ইউনাইডেট ফোরামের শরিক সংগঠন উত্তরবঙ্গ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ ওরাওঁ বলেন, ‘চা বাগানের যে জমির পাট্টা দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে তাতে আদিবাসী সমাজের কোনও লাভ হবে বলে আমরা মনে করি না। দীর্ঘদিনের দাবি, যেখানে শ্রমিকরা বসবাস করেন সেই পুরো জমির পাট্টা দিতে হবে। তা পূরণ হচ্ছে না। সেকারণেই আন্দোলন।’
আরেকটি সংগঠন আদিবাসী গ্রামসভার অন্যতম শীর্ষ নেতা চন্দন লোহারা বলেন, ‘সরকারের কাছে আবেদন ৫ ডেসিমেল নয়। আমাদের জমির অধিকার দিতে হবে।’ এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন সমাজকর্মী অনুরাধা তলোয়ার। তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা নিয়ে রাজ্যের যা পরিকল্পনা তা এককথায় অবাস্তব ও গরিব বিরোধী। যে কারণে প্রতিটি সামাজিক সংগঠন এর বিরোধিতায় সরব হয়েছে। নিজেদের দীর্ঘদিনের বাসভূমির পাট্টার দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক।’
এদিনের সভায় অন্য সংগঠনগুলির মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অখিল ভারতীয় আদিবাসী মুক্তি মোর্চা, অখিল ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ, ডুয়ার্স-তরাই আদিবাসী মহিলা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ভারতীয় মুন্ডা সমাজ, পশ্চিমবঙ্গ চা মজুর সমিতি, আদি ধরম সারনা পারহা খোড়া, সর্ব ভারতীয় আদিবাসী বিকাশ সংস্থার প্রতিনিধিরা।