উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ পুজো দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল মণ্ডপে পৌছলেও তাঁর ধারে কাছে এলেন না পুজো উদ্যোক্তারা। সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলেন না প্রশাসনের কোনও কর্তাই। সপ্তমীতে এমনই ঘটনা ঘটল কল্যাণী আইটিআই মোড়ে লুমিনাস ক্লাবের পুজো মণ্ডপে। ১৫ মিনিট মণ্ডপে থেকে রাজ্যপাল সিভি আনন্দবোস চলে গেলেন অন্য ক্লাবের উদ্দেশ্যে। এই ঘটনায় সমালোচনার ঢেউ উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
শুক্রবার দুপুর ১২টা নাগাদ রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস পুজো দেখতে গিয়েছিলেন কল্যাণী আইটিআই মোড়ে লুমিনাস ক্লাবের পুজো মণ্ডপে। এই পুজোর মূল উদ্যোক্তা কল্যাণী শহর তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি অরূপ মুখোপাধ্যায়। এই পুজো কমিটির সভাপতি, কল্যাণীর উপ-পুরপ্রধান তথা তৃণমূলের রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা কমিটির সম্পাদক বলরাম মাঝি। এ ছাড়াও তৃণমূলের অনেকেই এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত। এদিন রাজ্যপাল পুজো মণ্ডপে পৌঁছানোর পর দেখা যায় কোনও কর্মকর্তাই উপস্থিত নেই সেখানে। এমনকি স্থানীয় থানার পুলিশ থাকলেও পুলিশ সুপার বা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কোনও অফিসারেরও দেখা মিলল না। যদিও মণ্ডপের খুব কাছেই বুদ্ধপার্কে রানাঘাট পুলিশ জেলার পুলিশ সুপারের দপ্তর। সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে আসেননি কল্যাণীর মহকুমাশাসক বা পুরপ্রধানও। মহকুমা শাসক না আসলেও তাঁর দপ্তরের এক ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান রাজ্যপালকে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। এদিন সেখানে ১৫ মিনিট থেকেই বাংলায় ‘ভ্রষ্টাচার’ ও হিংসার বিরুদ্ধে সংগ্রামের শপথ নেওয়ার কথা বলে রাজ্যপাল ফিরে যান।
এই প্রসঙ্গে পুজো কমিটির কর্তাদের দাবি, রাজ্যপালের আসার খবর আগে থেকে জানায়নি রাজভবন। রাত জাগার ফলে দুপুর ১২টার মধ্যে তাঁদের অনেকেরই মণ্ডপে হাজির হওয়া সম্ভব হয়নি। যদিও পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, রাজ্যপাল যে শুক্রবার আসছেন, তা পুজো কমিটিকে জানানো হয়েছিল।
রাজভবনের সঙ্গে নবান্নের সংঘাতের জেরেই কি শাসক দলের নেতা ও পুলিশ-প্রশাসনের কর্তাদের এই অনুপস্থিতি? এই প্রসঙ্গে স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়ের মতে, “রাজ্যের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আধিকারিক এসেছেন, অথচ পুজো কমিটির লোকজন তো বটেই, এমনকি পুলিশকর্তারাও সেখানে উপস্থিত নেই। এটা অত্যন্ত নিন্দনীয়।”
রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের দাবি, ‘‘রাজ্যপাল এলে প্রোটোকল মেনে সকলের হাজির থাকা উচিত। পুজো কমিটি জানে না, এটা হতে পারে না। তৃণমূলের লোকেরা জেনে-বুঝেই আসেনি। এরা নোংরামির চরম পর্যায় পৌঁছেছে।’’ লুমিনাসের পুজোর কর্ণধার তথা তৃণমূল নেতা অরূপ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “রাজভবনের তরফে আমাদের পুজো কমিটিকে রাজ্যপালের আসার কথা জানানো হয়নি।” সভাপতি বলরামেরও দাবি, “আমরা হঠাৎ করেই জানতে পেরেছি। তখন অন্যত্র আগে থেকে নির্ধারিত কর্মসূচিতে ছিলাম।” এই প্রসঙ্গে রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার কুমার সানির কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কোনও মন্তব্য করেননি কল্যাণী মহকুমাশাসক হীরক মণ্ডল।