বিশ্বজিৎ সরকার, রায়গঞ্জ: ‘প্রতারক’ চিকিৎসকও। কথা ছিল যৌথ উদ্যোগে তৈরি হবে নার্সিংহোম। সেই ফাঁদে পা দিয়েই হারাতে হল ৩০ লক্ষ টাকা। এক মহিলা প্রসূতি রোগ বিশেষজ্ঞর কাছ থেকে ৩০ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে (Fraud Case) এক চিকিৎসককে গ্রেপ্তার (Govt Doctor Arrested) করেছে রায়গঞ্জ (Raiganj) থানার পুলিশ।
ধৃত চিকিৎসকের নাম সিদ্ধার্থ দত্ত ওরফে যুবরাজ। ধৃতের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। রায়গঞ্জ জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী দীপ্তেশ ঘোষ জানিয়েছেন, প্রতারণার অভিযোগে ওই চিকিৎসককে ১৪ দিনের জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
জানা যাচ্ছে, রায়গঞ্জ মেডিকেলের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ নিতু কুমারীর সঙ্গে পরিচয় হয় সিদ্ধার্থ দত্তর। আটজন চিকিৎসক মিলে রায়গঞ্জে একটি নার্সিংহোম করার কথা ছিল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী সাত চিকিৎসক সিদ্ধার্থ দত্তর হাতে দু’কোটি ৪০ লক্ষ টাকা তুলে দিয়েছিলেন। দীর্ঘ তিন বছর পেরিয়ে গেলেও নার্সিংহোম না হওয়ায় টাকা ফেরত চান নিতু কুমারী। সিদ্ধার্থ তাঁকে ৩০ লক্ষ টাকার একটি চেকও দেন। যদিও নিতুদেবী ব্যাংকে সেই চেক দাখিল করলে সেটা বাউন্স করে। জানা যায়, সিদ্ধার্থর অ্যাকাউন্টে অত টাকাই নেই। নিতুদেবী বুঝে যান, তাঁরা সিদ্ধার্থর পাতা প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন।
শুধু নিতু কুমারী নন, প্রতারণার অভিযোগে একাধিক চিকিৎসক সিদ্ধার্থর বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সিদ্ধার্থ রায়গঞ্জ শহরের বীরনগর এলাকার বাসিন্দা হলেও এনআরএস মেডিকেলের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত। কর্মসূত্রে তিনি হুগলি জেলার বরানগর থানার উত্তরপাড়া এলাকায় বসবাস করেন। ২০২০ সালে করোনার সময় তিনি রায়গঞ্জ মেডিকেলের প্যাথলজি বিভাগের দায়িত্ব সামলেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, শুধু চিকিৎসকদের সঙ্গেই নয়, রায়গঞ্জের বিদ্রোহী মোড়ে মাংস, সবজি সহ একাধিক দোকানে কয়েক লক্ষ টাকার সামগ্রী ধারে নিয়েছেন। ওই দোকানদাররাও সিদ্ধার্থর বিরুদ্ধে রায়গঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার জানান, এই প্রতারণা মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।