হরিশ্চন্দ্রপুর: স্ত্রীর মর্যাদার দাবিতে দ্বিতীয় স্বামীর বাড়িতে ধর্নায় বসলেন এক গৃহবধূ। অবিলম্বে স্বামীর বাড়িতে ঠাঁই না মিললে আত্মহত্যার হুমকিও দিয়েছেন তিনি। ধর্নার টানা দু’দিন কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত স্বামীর বাড়ির তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। এমনকি, ওই গৃহবধূর দ্বিতীয় স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক বলে জানা গিয়েছে। ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার বাগমারা গ্রামে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগমারা গ্রামের বাসিন্দা সাইবা খাতুন (২৭)-এর প্রথম বিয়ে হয়েছিল রশিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের চন্ডিপুর এলাকার এক পার্শ্বশিক্ষকের সঙ্গে। সেখানে বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যে তাঁর প্রথম স্বামীর সঙ্গে তালাক হয়ে যায়। তারপর সাইবা বাগমারা গ্রামে বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। সেখানেই বছর তিনেক ধরে গ্রামের যুবক মুজাহিদ আলমের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমনকি, বছর তিনেক আগে তাঁদের দু’জনের শরিয়ত মেনে বিয়ে পর্যন্ত হয়। মাস খানেক আগে সেই বিয়ে আইন মতে রেজিস্ট্রি করা হয়। কিন্তু এই বিয়ের কথা সাইবাকে গোপন রাখতে চাপ দেন মুজাহিদ। জানা গিয়েছে, মুজাহিদ আগে থেকে বিবাহিত ছিলেন এবং তাঁর দুই সন্তান রয়েছে।
এদিকে সাইবার অভিযোগ, আগের শ্বশুরবাড়ি এবং বর্তমানে বাপের বাড়ি থেকে তিনি প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার সম্পত্তি পেয়েছেন। সেই সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্যই বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হবেন মেলামেশাও করেছেন বলে অভিযোগ। এরপর তাঁরা গোপনে বিয়ে করলেও এখন তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা দিতে নারাজ মুজাহিদ। এমনকি, স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে বললে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি পর্যন্ত দেওয়া হয়। যদিও সাইবা খাতুনের দাবি, বিয়ের সময় তাঁর কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন মুজাহিদ। তাঁকে গাড়ি পর্যন্ত কিনে দিয়েছেন সাইবা। মুজাহিদের ভাই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে ভোটে দাঁড়িয়েছিল সেই দাঁড়ানোর খরচা বাবদ তিন লক্ষ টাকাও দিয়েছিলেন সাইবা। কিন্তু শরিয়ত এবং আইন মেনে বিয়ে করলেও তাঁকে মুজাহিদ বাড়ি নিয়ে যেতে নারাজ। তাই বাধ্য হয়ে গতকাল থেকে তিনি মুজাহিদের বাড়ির সামনে স্ত্রীর মর্যাদা দাবিতে ধর্নায় বসে রয়েছেন।
এদিকে, ধর্নায় বসার দিন থেকেই বেপাত্তা মুজাহিদ এবং তাঁর বাড়ির লোকজন। এদিকে সাইবা দাবি তুলেছেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না তাঁকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে মুজাহিদ ঘরে তুলবেন ততক্ষণ তিনি এই ধর্না চালিয়ে যাবেন। কারণ তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন তাঁকে ঘরে রাখতে নারাজ। আইন মেনে এই সমস্যার সমাধান না হলে তিনি বাধ্য হয়ে আত্মহত্যা করবেন বলে জানিয়েছেন।