ভাস্কর বাগচী, শিলিগুড়ি: যত কাণ্ড দার্জিলিংয়ে (Darjeeling)! লোকসভা আসনে ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করতে হবে বলে বুধবারই সুর চড়িয়েছিলেন কার্সিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। তার ঠিক পরদিনই বৃহস্পতিবার সাতসকালে আচমকা শিলিগুড়িতে চায়ে পে চর্চায় হাজির হয়ে নিজেকে ভূমিপুত্র হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেন প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা (Harsh Vardhan Shringla)।
শ্রিংলার দাবি, ১৯৬০ সাল থেকে তিনি শিলিগুড়ির প্রধাননগরের বাসিন্দা। তাঁর কথায়, ‘আমি দার্জিলিং ও শিলিগুড়ির মানুষের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি, এখানকার মানুষ ভূমিপুত্রকেই জনপ্রতিনিধি চান।’ সরাসরি প্রার্থী হওয়ার কথা না বললেও পদ্মের ঘরে জল্পনা কিন্তু বাড়ছেই। কারণ ক’দিন আগেই রাজু বিস্ট প্রকাশ্য সভায় দাবি করেছিলেন, দার্জিলিং আসন থেকে তিনিই প্রার্থী হচ্ছেন। এমন আবহে ঘরে বিদ্রোহের আঁচ তুলেছেন কার্সিয়াংয়ের বিধায়ক। আর তার পরদিনই শ্রিংলার ‘প্রত্যাবর্তন’ অন্য ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই মনে করছে বিজেপির একাংশ।
দলের অন্দরে চর্চা, শীর্ষ নেতৃত্বের সবুজ সংকতে না পেলে শ্রিংলা কেনই বা এসে পড়ে থাকছেন দার্জিলিং বা সমতলে। একবার নয়, একাধিকবার। নিশ্চয়ই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চাইছে, দার্জিলিংয়ে শ্রিংলাকেই প্রার্থী করতে। যে জল্পনা আরও বেড়েছে বিজেপির পদাধিকারীদের কথায়। প্রাক্তন বিদেশসচিব শহরে এলেও তাঁর কর্মসূচির কথা জানেন না বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরুণ মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘আমি ওঁর এই কর্মসূচি সম্পর্কে জানি না। তবে উনি মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতেই পারেন। এতে সমস্যার কিছু নেই। প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি দলই ঠিক করে।’
এদিন সকালে স্থানীয় কয়েকজন বিজেপি নেতাকে নিয়ে শিলিগুড়ি কলেজ মাঠে আসেন শ্রিংলা। সেখানে চা খাওয়ার পাশাপাশি প্রাতর্ভ্রমণকারীদের সঙ্গে পরিচিত হন। পরে উত্তরবঙ্গ সংবাদকে তিনি বলেন, ‘আমি আমার এলাকায় এসেছি। এই এলাকা বহুদিন থেকে আমার পরিচিত। অনেক মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছে। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ভালো লাগে।’
এর আগেও শিলিগুড়ি মহকুমার পাশাপাশি পাহাড়ের বিভিন্ন অঞ্চলে মানুষের সঙ্গে পরিচিত হতে দেখা গিয়েছে শ্রিংলাকে, যা নিয়ে অনেকদিন ধরেই বিজেপির অন্দরে কানাঘুষো, তবে কি রাজুকে সরতে হবে দার্জিলিং থেকে? রাজুর অনুগামীরা অবশ্য মনে করেন, পাঁচ বছরে তিনি যা কাজ করেছেন, অতীতে কোনও বিজেপি সাংসদ করেননি। সেই কারণে মিষ্টভাষী রাজুকেই ফের প্রার্থী হিসেবে চান দলের একটা বড় অংশ।
শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ অবশ্য বলছেন, ‘হর্ষবর্ধনবাবু প্রাতর্ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন তা আমার জানা নেই। তবে আমি মনে করি, আমাদের বর্তমান সাংসদ অত্যন্ত দক্ষ। তিনি যা কাজ করেছেন বিগতদিনে কাউকে এত কাজ করতে দেখা যায়নি।’ শুক্রবার সকাল ৯টায় ঝংকার মোড়ে স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তিতে মাল্যদানের পাশাপাশি দুঃস্থদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করার কথা রয়েছে শ্রিংলার। দুপুরে প্রধাননগরে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন তিনি। প্রার্থী কে হবেন চূড়ান্ত না হলেও তাঁর ধ্যান কিন্তু জনসংযোগেই।