রায়গঞ্জ: রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনের বিরুদ্ধে মাথা কেটে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ তুললেন বীরেন সিং নামে এক বিজেপি কর্মী। বৃহস্পতিবার ১৬ নম্বর জেলা পরিষদ আসনের বিজেপি প্রার্থী বিভাস বিশ্বাসকে পাশে নিয়ে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ জানান তিনি। ইতিমধ্যে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকেও বিষয়টি জানিয়েছেন।
জগদীশপুর অঞ্চলের হালালপুরের বাসিন্দা বীরেন আগে তৃণমূল কংগ্রেস করতেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এদিন তিনি বলেন, ‘গতকাল দুপুরে রায়গঞ্জ থেকে গ্রামে ফিরে এসে দেখি তৃণমূল কংগ্রেসের সভা সবেমাত্র শেষ হয়েছে। মন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনও বসে আছেন। আমি ওই জায়গায় যেতেই তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীরা আমাকে হুমকি দিয়ে বলে, বেশি বেড়ে গিয়েছিস। মন্ত্রীর গাড়ির সামনে যেতেই মন্ত্রী শুধু বললেন, ৮ তারিখের পর তোমার মাথা কাটা যাবে। এরপর থেকে খুব ভয়ে আছি।’
যদিও এই ব্যাপারে মন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তবে ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দীপঙ্কর বর্মনের বক্তব্য, ‘বীরেন সিং আমাদের কর্মী ছিলেন। তাঁকে মন্ত্রী হুমকি দিয়েছেন তাঁর কোনও প্রমাণ আছে কি?’
এর পাশাপাশি তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট না দিলে এলাকার উন্নয়ন স্তব্ধ করে দেওয়ার হুমকির অভিযোগ উঠেছে সত্যজিৎ বর্মনের বিরুদ্ধে। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মন্ত্রী গ্রামবাসীদের রাজবংশী ভাষায় বলছেন, ‘তৃণমূলকে ভোট না দিলে কোনও উন্নয়ন হবে না। স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য তৃণমূলকে ভোট দিতে হবে। আর যদি মনে করেন এগুলির দরকার নেই তাহলে অন্য কাউকে ভোট দেবেন। প্রধান তো টিএমসির হবেই। সবাই যদি আমাকে বলেন, ভোট দিয়ে মেম্বারকে জিতিয়ে আনবেন তাহলে রাস্তাটা করে দেব। আর যদি না জেতান তাহলে পাঁচ বছরে না হবে রাস্তা, না হবে লাইট এবং না হবে জলের ব্যবস্থা। পাঁচ বছর পর মিলিয়ে নেবেন।’
মন্ত্রীর এই হুমকির ভিডিও নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এপ্রসঙ্গে বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকার বলেন, ‘ও একটা চোর। বিদ্যুৎ চুরি করেছে, কেস চলছে ওর নামে। ওর স্ত্রীর নামে পুকুর চুরির কেস চলছে। ও যাতে লাগাতার এই চুরি করে যেতে পারে সেজন্য ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে। সরকারি প্রকল্প কি উনি নিজের টাকায় চালাচ্ছেন? ভোট না পেলে উন্নয়ন বন্ধ করা যায় নাকি? তৃণমূল কংগ্রেসের এই ধরণের অপপ্রয়াস সাধারণ মানুষ রুখে দেবে।’
যদিও মন্ত্রীর ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্দীপ বিশ্বাস বলেছেন, ‘মন্ত্রী কাউকে কোনও হুমকি দেননি। এটা একেবারে গ্রাম্য বৈঠক। এটা হাই লাইট করার বিষয় নয়। আমরা সারা বছর মানুষের কাজ করে ভোট চাই। সত্যজিৎ বর্মনকে বদনাম করতেই কুৎসা করা হচ্ছে।’