অভিজিৎ ঘোষ, আলিপুরদুয়ার: নিয়ম বলে, তিন মাস পরপর রোগী কল্যাণ সমিতির একটি বৈঠক করতেই হবে। প্রয়োজন হলে আরও কম সময়ের ব্যবধানেও করা যেতে পারে। তবে প্রায় ছয়মাস হয়ে গেলেও আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক হয়নি। এদিকে বৈঠক না হওয়ায় হাসপাতালে বিভিন্ন দপ্তরে কাজ থমকে রয়েছে। বৈঠকে বিভিন্ন দপ্তরকে একসঙ্গে পেলে সমস্যাগুলি সমাধান হবে বলে আশাবাদী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে কবে এই বৈঠক হবে, তা নিয়ে কোনও সঠিক সময় বের হচ্ছে না। এবিষয়ে জেলা হাসপাতাল সুপার ডা: পরিতোষ মণ্ডলের বক্তব্য, রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান অসুস্থ। তিনি বাইরে রয়েছেন। ওঁনার সঙ্গে কথা বলে দেখা হবে কবে বৈঠক করা যায়।
সম্প্রতি ১১২ জন সাপোর্ট স্টাফের বেতন নিয়ে জট দেখা দিয়েছে। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক হলে সেই বিষয়টি বিধায়কের মাধ্যমে সরাসরি স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেওয়া যেত বলে মনে করা হচ্ছে। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা উপস্থিত থাকেন। জেলা প্রশাসনের যে দপ্তরগুলি হাসপাতালের চিঠি পেয়েও বিভিন্ন কাজ আটকে রেখেছে, বৈঠকে সেগুলি সরাসরি সমাধান হওয়ায় সম্ভাবনা থাকছে। যেমন পূর্ত দপ্তরে হাসপাতালের বেশ কয়েকটি কাজ আটকে রয়েছে। নতুন ট্রমা কেয়ার ইউনিটের এসটিমেট এখনও তৈরি হয়নি, ২৪ বেডের হাইব্রিড সিসিইউ তৈরি হলেও কিছু কাজ এখনও অসম্পূর্ণ রয়েছে। আবার হাসপাতালের নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও পরিকল্পনা করতে পারেনি পূর্ত দপ্তর। বিষয়গুলি নিয়ে হাসপাতাল থেকে চিঠি করা হলেও পূর্ত দপ্তর থেকে এগুলি করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। বিভিন্ন কারণে এই বৈঠক হওয়া গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলা হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বর্তমান চেয়ারম্যান আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। এবছর ফেব্রুয়ারিতে বিজেপি থেকে তৃণমূলে নাম লেখানোর কয়েকদিন পরই এই পদে প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীকে সরিয়ে আনা হয় সুমনবাবুকে। দায়িত্ব পাওয়ার পর মার্চের ১৮ তারিখ প্রথম রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক করেন তিনি। এরপর ছয়মাস কেটে গেলেও রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠক হয়নি। মার্চ মাস থেকেই বিধায়কের চোখের সমস্যা শুরু হয়। এরপরই তৃণমূলের নবজোয়ার, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে ব্যস্ত ছিল সুমনবাবু। অন্যদিকে হাসপাতাল সুপারও ওই সময় প্রায় দেড় মাসের জন্য ছুটিতে যান। সুপার ছুটি থেকে এলেও বিধায়কের চোখের সমস্যা আরও বেড়ে যায়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধিন রয়েছেন। আর এসব কিছুর মাঝে হাসপতালের বিভিন্ন সমস্যা যেন আরও জট পাকিয়ে যাচ্ছে।