বর্ধমান: মাধ্যমিকের পর উচ্চমাধ্যমিকের মেধা তালিকাতেও জায়গা করে নিল পূর্ব বর্ধমান জেলার একাধিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা। তার অন্যতম কাটোয়া মহকুমার মঙ্গলকোটের ক্ষীরগ্রাম নিবাসী বনকাপাসী এসএম উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী অনন্যা সামন্ত। সে ৪৯২ নম্বর পেয়ে মেধা তালিকার যুগ্মভাবে পঞ্চম অধিকার করেছে। ভবিষ্যতে সরকারি দপ্তরের উচ্চপদস্থ আমলা হতে চায় অনন্যা। একই মহকুমার কাটোয়ার দাঁইহাটের সংযুক্তা বিশ্বাস ৪৮৯ নম্বর পেয়ে মেধাতালিকায় অষ্টম স্থান দখল করেছেন। ভবিষ্যতে ইতিহাস বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে অধ্যাপনা করতে চায় সংযুক্তা। মাধ্যমিকের পর এবছরের উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকাতের জায়গা করে নিয়েছে বর্ধমানের মিউনিসিপ্যাল বয়েজ হাই স্কুল। এই স্কুলের ছাত্র রূপঙ্কর ঘটক ৪৯০ নম্বর পেয়ে রাজ্যে সপ্তম স্থান অধিকার করেছে। শহর বর্ধমানের রবীন্দ্রপল্লী এলাকার বাসিন্দা রূপঙ্কর ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চায়। রুপঙ্করের বাবা বিশ্বজিৎ ঘটক, বড়শুল সিডিপিএ স্কুলের প্রধান শিক্ষক। মা কৃষ্ণা ঘটক হরিসভা প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা।
রূপঙ্কর জানিয়েছে, প্রতিদিন নিয়ম করে সে ১২-১৪ ঘন্টা পড়াশোনা করতো। পড়াশোনার বাইরে সে ক্রিকেট খেলা দেখতে, গল্পের বই পড়তে ও গান শুনতে ভালবাসে বলে জানিয়েছে। এরা ছাড়াও যুগ্মভাবে নবম স্থান অধিকার করেছে জামালপুর ব্লকের সেলিমাবাদ স্কুলের ছাত্রী মোনালিসা পাল এবং মেমারির বিদ্যাসাগর স্মৃতি বিদ্যালয় শাখা ১ এর ছাত্র অপূর্ব মণ্ডল। দু’জনেই ৪৮৮ নম্বর পেয়েছে। মোনালিসার এই সাফল্যের পিছনে সবথেকে বড় অবদান তাঁর বাবা গৌতম পাল ও মা মৌসুমিদেবীর। করোনা অতিমারির সময় চাকরি হারান মোনালিসার বাবা। তারপরে তাঁদের সংসারে নামে অনটন। তবু শত কষ্টের মধ্যেও মেয়ের লেখাপড়ায় কোনও ব্যাঘাত ঘটাতে দেননি বাবা মা। এ বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় নবম স্থান অধিকার করে সেই বাবা মায়েরই মুখ উজ্জ্বল করল কৃতী ছাত্রী মোনালিসা। সে ডাব্লিউবিসিএস পরীক্ষা দিয়ে উচ্চপদস্থ সরকারি আমলা হতে চায়। মোনালিসার মতই কৃতী ছাত্র অপূর্ব মণ্ডলের শৈশব জীবনও খুব একটা সুখকর ছিল না। অপূর্বর বয়স যখন মাত্র দু’বছর তখন তাঁর ইঞ্জিনিয়ার বাবা প্রয়াত হন। তার পর অপূর্বকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মত মানুষ করতে মা ও দিদা মিলে সংসারের হাল ধরেন। মায়ের উপার্জনেই এখন অপূর্ব দের সংসার চলে। অপূর্ব জানিয়েছে, সে ভবিষ্যতে বড় ডাক্তার হতে চায়।