উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: বিচারপতি নিয়োগ নিয়ে ফের সংঘাতের আবহ তৈরি হল কেন্দ্র এবং সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে। সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে কলেজিয়াম ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে হয়। বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপারে কলেজিয়ামই চূড়ান্ত সুপারিশ করে। সেই সুপারিশ মোতাবেক দেশের বিভিন্ন হাইকোর্ট থেকে আসা ৮০টি সুপারিশ মোদি সরকার পাঠায়নি কলেজিয়ামের কাছে। কেন পাঠানো হয়নি সুপারিশ তা নিয়েই কেন্দ্র সরকারের কাছে কৈফিয়ৎ চাইল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন বিচারপতি শুধাংশু ধুলিয়া ও বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কলের বেঞ্চ তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেন। বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কল এদিন তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, “অনেক কিছু বলার রয়েছে। কিন্তু নিজেকে আটকে রেখেছি। অ্যাটর্নি জেনারেল আরও সাত দিন সময় চেয়েছেন। কিন্তু পরদিন আর চুপ থাকব না।”
কি এই কলেজিয়াম? কলেজিয়াম হল ৫ জনের একটি কমিটি। সেই কমিটিতে থাকেন দেশের প্রধান বিচারপতি ও অন্য প্রবীণ বিচারপতিরা। তাঁরা সুপারিশ করেন হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিভিন্ন নাম। তাঁদের সুপারিশ করা নাম পাঠান হয় কেন্দ্র সরকারের কাছে। সেই নাম নিয়ে কেন্দ্রের আপত্তি থাকলে তারা কলেজিয়ামের কাছে ফেরত পাঠাতে পারে। কিন্তু কলেজিয়াম ফের সেই নামে সিলমোহর দিলে তা কেন্দ্র মানতে বাধ্য। সেখান থেকেই কেন্দ্র সরকার নাম পাঠায় রাষ্ট্রপতির কাছে। তারপর রাষ্ট্রপতি নিয়োগ করেন।
বিজেপি ক্ষমতায় আসার আগে কলেজিয়াম যে যে নাম সুপারিশ করত, তাতেই মান্যতা দিত কেন্দ্র। কিন্তু এনডিএ ক্ষমতায় আসার পর থেকে সেই রীতিতে ভাঁটা পরে যায়। আর সে কারণেই সংঘাতের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কিসান কল ও বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া বলেন, ‘বিষয়টা আমরা খুব কাছ থেকেই নজরে রেখেছি। হাইকোর্ট থেকে পাঠানো ৮০টি নাম দশ মাস ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে একটি মৌলিক প্রক্রিয়া রয়েছে। সরকারকে মতামত জানাতে হবে, যাতে কলেজিয়াম কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ২৬জন বিচারপতি ও একটি স্পর্শকাতর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি নিয়োগের বিষয়টি বকেয়া রয়েছে। তা ছাড়া আরও ৮টি হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ব্যাপার ঝুলে রয়েছে। জানি যে কত জনের নাম ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু কলেজিয়ামকে জানানো হচ্ছে না।’ অন্যদিকে, শীর্ষ আদালত কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল জবাব দেওয়ার জন্য ১ সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। বিচারপতিরা ২ সপ্তাহ সময় দিয়েছেন। আগামী ৯ অক্টোবর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে।