পুলকেশ ঘোষ, কলকাতা : উত্তরবঙ্গের জন্য জোড়া সুখবর। বিমান যোগাযোগে নতুন দিগন্ত খুলে যেতে চলেছে অল্পদিনের মধ্যে। পাশাপাশি সংক্রামক রোগের চিকিৎসায় আলাদা আইডি হাসপাতাল পেতে চলেছে উত্তরবঙ্গ। রাজ্য বিধানসভায় সোমবার দুটো খবরই শুনিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গে আইডি হাসপাতাল তৈরির কথা মুখ্যমন্ত্রী জানান শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষের এক প্রশ্নের জবাবে। কোভিডপর্বে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতাল দক্ষিণবঙ্গের মানুষের অন্যতম ভরসাস্থল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ওই সময় ওই হাসপাতালে রোগীর ভিড় উপচে পড়ত। কিন্তু উত্তরবঙ্গে সংক্রামক রোগীদের জন্য এরকম কোনও ভরসাস্থল নেই। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা বাস্তবায়িত হলে উত্তরবঙ্গের মানুষ অত্যন্ত উপকৃত হবেন বলে এলাকার তৃণমূল বিধায়কদের দাবি।
সংক্রামক রোগের জন্য উত্তরবঙ্গে একটি পৃথক হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন ধরেই অনুভব করছিল স্বাস্থ্য দপ্তর। এ ব্যাপারে আগে কথা হলেও সুনির্দিষ্ট কোনও প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়নি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় ঘোষণা করার পর উত্তরবঙ্গে আইডি হাসপাতাল বাস্তবায়িত হওয়ার ক্ষেত্রে দ্রুত পদক্ষেপ হবে বলেই মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ বিধানসভায় অভিযোগ করেন, ‘ডেঙ্গি চিকিৎসার জন্য বহু বেসরকারি হাসপাতাল স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নিতে রাজি হচ্ছে না।’ জবাবে মুখ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না নিলে বেসরকারি হাসপাতালগুলির লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘বেসরকারি হাসপাতালগুলিকে বলছি, আপনারা শুধু টাকার চিন্তা না করে মানুষের দুর্ভোগের কথাও ভাবুন। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড ফেরানো আমরা বরদাস্ত করব না। সমস্যা হলে স্বাস্থ্য কমিশনে মানুষ অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
‘আলিপুরদুয়ারের হাসিমারায় নতুন বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা করেছে রাজ্য সরকার।’ কুমারগ্রামের বিজেপি বিধায়ক মনোজ ওরাওঁ তাঁর এলাকায় উন্নয়নের পাশাপাশি বিমানবন্দর নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। মালদায় বিমান চলাচল নিয়ে প্রশ্ন করেন ইংরেজবাজারের বিজেপি বিধায়ক শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরীও।
প্রশ্নগুলির জবাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বালুরঘাটে বিমানবন্দর তৈরির কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গিয়েছে। মালদায় বিমানবন্দর তৈরির কাজ একেবারে শেষ পর্যায়ে। মালদায় উড়ান এখন অসামরিক বিমান চলাচল দপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষায় আছে। আমরা চেয়েছিলাম যেন বড় প্লেন নামে। সেজন্য ৩০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে।’ পুরুলিয়াতেও বিমানবন্দর তৈরির পরিকল্পনা আছে বলে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানান। তাঁর ঘোষণা অনুযায়ী অন্ডালে একটি কার্গো বিমানবন্দর চালু হবে। হাসিমারা বিমানবন্দর নিয়ে আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক জন বারলা বলেন, ‘উনি মুখে বলছেন, বাস্তবে তার নথি কোথায়? ওটা পেলে তবে তো কেন্দ্রীয় সরকার উদ্যোগী হবে।’
কোচবিহার বিমানবন্দরে এখন সিঙ্গল ইঞ্জিন উড়ান চলাচল করছে। কিন্তু মালদা, বালুরঘাটের পাশাপাশি কোচবিহার বিমানবন্দর থেকেও ডাবল ইঞ্জিন প্লেন চলাচলের অনুমোদন চান মমতা। এর ছাড়পত্র দেবে কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রক। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ওই ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। বিজেপি বিধায়কদের তিনি অনুরোধ করেন, ‘আপনারা এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিন। তাহলে দ্রুত ছাড়পত্র পাওয়া যাবে। এতে উত্তরবঙ্গের মানুষ খুব উপকৃত হবেন।’