বর্ধমান: পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে নেমে কলকাতা হাইকোর্টকে নিশানা করলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ। শনিবার পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের জনসভায় বক্তব্য রাখতে উঠে সায়নী বলেন, ‘হাইকোর্ট মনে করলে বিজেপিকে জয়ী ঘোষণা করে দিতে পারে। আমরা সেই ভয় পাচ্ছি।‘ হাইকোর্ট নিয়ে সায়নী ঘোষের এমন কটাক্ষ রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট শোরগোল ফেলে দিয়েছে। যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে শাসকদলের সব পরিকল্পনা হাইকোর্টের নির্দেশে ভেস্তে যাওয়ায় শাসকদল এখন দিশেহারা।
পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন দাখিল পর্ব শেষ হতেই সর্বত্র প্রচারে নেমে পড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী ও নেতা নেত্রীরা। তারই মধ্যে পঞ্চায়েত ভোট সংক্রান্ত নানা ইস্যু নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একের পর এক মামলা করেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর দাবিতে করা মামলার রায় শুভেন্দু অধিকারীর পক্ষে গিয়েছে। বাকি মামলাগুলিতেও কমিশন নস্তানাবুদ হচ্ছে। এসব নিয়ে শাসকদলের নেতা নেত্রীরাও বেজায় ক্ষুব্ধ। এদিন সায়নীর বক্তব্যে যেন সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
সায়নী ঘোষ এদিন দুপুরে প্রথমে সতীপীঠের অন্যতম পীঠ, বাহুলাক্ষি মন্দিরে পুজো দেন। এরপর হেঁটে কেতুগ্রামের গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির, জেলা পরিষদের প্রার্থীদের নিয়ে প্রচার করেন। এরপরে তিনি কেতুগ্রাম বাসস্ট্যান্ডে একটি পথসভা করেন। সেই পথসভাতে তিনি রাজ্য সরকারের উন্নয়ন কাজের নানা খতিয়ান তুলে ধরেন। এরপর ওই সভা থেকেই সায়নী কলকাতা হাইকোর্টকে নিশানা করে বলেন, ‘হাইকোর্ট এখন সব বিজেপির পক্ষে রায় দিচ্ছে। হাইকোর্ট যদি এখন মনে করে বিজেপিকে জয়ী ঘোষণা করে দেব, তাও হতে পারে।‘ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সায়নী বলেন, ‘আমরা ভয় পাচ্ছি। হাইকোর্ট মনে করলে বিজেপিকে জয়ী ঘোষণাও করে দিতে পারে। আর যদি এরকম হয়,তা অসাধারণ চিত্রনাট্য হবে। তবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানুষের মনে বিরাজ করেন। তাই যারা যাই করুক না কেন ওই জায়গা থেকে মানুষকে কেউ সরাতে পারবে না।‘
এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, ‘রাজ্য পুলিশকে নিয়ে এক তরফা ভোট করিয়ে সব পঞ্চায়েত দখলের পরিকল্পনা ছিল শাসকদলের। কিন্তু কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর দাবি নিয়ে শুভেন্দু অধিকারী কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে শাসকদলের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছেন। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য হাইকোর্ট একের পর এক যে নির্দেশ দিচ্ছে। আর তাতেই এখন দিশেহারা শাসকদলের নেতারা।‘