প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়, বর্ধমান: পুলিশ ও প্রশাসনের উপর আর ভরসা না করে মারের বদলা পালটা মারের নিদান দিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ায় দলীয় জনসভায় যোগ দিয়ে দলের কর্মীদের এই বার্তাই রাজ্য বিজেপি সভাপতি। পাশাপাশি দলের কর্মীদের অভয় দিয়ে সুকান্তবাবু এও বলেন, পুলিশ আপনাদের বিরুদ্ধে মামলা দিলে আমরা হাইকোর্ট থেকে জামিনের ব্যবস্থা করব। প্রয়োজন হলে সুপ্রিম কোর্টেও লড়ব।
জনসভা থেকে তৃণমূল কর্মীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার আরও বলেন, ‘তৃণমূলের গুন্ডাদের বলে যাচ্ছি, আমি মাস্টার মশাই। অনেক বেয়াদব ছাত্রকে সোজা করেছি। আমি প্রাইমারি থেকে ইউনিভার্সিটি অবধি পড়িয়েছি। তোমাদের মত গুন্ডাদের মাটির ১০০ ফুট নীচে কীভাবে পুঁতে দিতে হয় সেটা সুকান্ত মজুমদারের জানা আছে। পার্টি করছেন করুন, চুরি করছেন করুন, কিন্তু বিজেপি কর্মীদের গায়ে হাত দিলে তার হিসাব কড়ায়গন্ডায় বুঝিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা সুকান্ত মজুমদারের আছে।’
মুখ্যমন্ত্রীর বিদেশ সফর নিয়েও কটাক্ষ করেন সুকান্তবাবু। মুখ্যমন্ত্রীর নাম মুখে না এনে তিনি বলেন,’শিল্প খুঁজতে গিয়ে বলছেন, প্রচুর শিল্প পেয়েছি। কোন কোন শিল্পপতি পেলেন? শেষে কিনা সৌরভ গাঙ্গুলি! যাকে আমরা ক্রিকেটার হিসাবে জানি, সম্মান করি। অমিত শাহজির সঙ্গে তাঁর বাড়িতে একবার যাওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। তিনি কী করবেন? ২,৫০০ কোটি টাকার ইস্পাত শিল্প করবেন? ওই টাকায় কী হবে?লোহার রড তৈরির শিল্পও হবে না। ২৫,০০০ কোটি টাকা লাগে একটা শিল্ল তৈরি করতে। আসলে মুখ্যমন্ত্রী বাংলার মানুষকে ধোকা দিচ্ছেন, বোকা বানাচ্ছেন।’
কাটোয়ার জনসভা থেকে তৃণমূল বিধায়ক তথা পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথকে নজিরবিহীন আক্রমণ করেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি। তিনি বলেন, ‘আপনাদের জেলায় তো চোরের অভাব নেই, সব বড় বড় চোর। এখানের কাটমানি সিন্ডিকেটের সম্রাট রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তিনি কংগ্রেসে ছিলেন। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে গেলেন। এখন কী করবেন? কংগ্রেসের ‘পাপ্পু’ আর তৃণমূলের ‘আপ্পু’ তো জোট করছে। দিল্লির পাপ্পু হল রাহুল গান্ধি, আর বাংলার আপ্পু হল কয়লা ভাইপো। এখন রবীন্দ্রনাথ বাবু কী করবেন?কোথায় যাবেন বুঝতে পারছেন না। কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। শুনলাম কলকাতাতেও নাকি বাড়ি কিনেছেন।’ এরপর স্বপন দেবনাথকে নিশানা করে সুকান্ত বলেন, ‘তৃণমূলের এক একটা বিধায়ক বড়বড় চোর। শিক্ষিত ছেলেরা বেকার হয়ে বসে আছে। আর পূর্বস্থলীর দক্ষিণের বিধায়ক স্বপন দেবনাথের ছেলে চাকরি পেয়ে গিয়েছে। উনি নাকি এক সময় হাফ প্যান্ট পরে সাইকেলে চড়ে ঘুরে বেড়াতেন।’