খড়গ্রাম: দেশের সর্বোচ্চ আদালত যখন নিয়োগ দুর্নীতিতে রাজ্যকে ধাক্কা দিল, ঠিক তখন মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের নির্বাচনি জনসভা থেকে ফের শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবিকে উসকে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন বলেন, ‘বিজেপি নেতার বলছে তৃণমূল চুরি করেছে। যা বলছে তার প্রমাণ দিক। এখনও পর্যন্ত দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে রাজ্যে ৩৫০টি টিম পাঠিয়েছে। কিন্তু, কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেনি। আমরা দাবি জানালেও এখনও পর্যন্ত কোনও শ্বেতপত্র প্রকাশ করেনি। এদিকে দিল্লি সব টাকা আটকে রেখেছে। আমরা জানতে চাই ১০০ দিনের টাকা গেল কোথায়? তাই বলব বিজেপিকে হাটাও দেশকে বাঁচাও।’
অন্যদিকে, এদিন মুর্শিদাবাদ লোকসভা ও ভগবানগোলার উপনির্বাচন উপলক্ষ্যে একটি নির্বাচনি সভা থেকে তিনি জোটকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘ওদের তো একটা কিনলে আরেকটা ফ্রি। সিপিএম কিনলে কংগ্রেস ফ্রি, কংগ্রেস কিনলে সিপিএম ফ্রি।’
পাশাপাশি মুর্শিদাবাদের সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ সেলিমকে ‘বাজপাখি’ বলেও কটাক্ষ করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বলেন, ‘মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস সেলিমকে লড়তে পাঠিয়েছে, আর উত্তর দিনাজপুরে পাঠিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লকের রমজানকে, আবার মালদায় পঠিয়েছে আর একজনকে লড়তে। অর্থাৎ যে আসনগুলো তৃণমূলের পাকা আসন, সেগুলোতে জল ঢেলে দিয়ে যাতে বিজেপিকে জেতান যায়… তৃণমূল কংগ্রেসের ভোটটা কেটে। আমি বারবার বলব ভুল করলে কিন্তু আর হবে না, এই সুযোগ হারাবেন না।’
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে নাম না করে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘একটা নেতা না ন্যাতা, লিডার না ল্যাডার কী আছে ভগবান জানে। বোমা ফাটাবো বলছে। লজ্জা করে না তোর। ২৩ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি খেয়ে উল্লাস করছে। বাড়ির ভাই বোনের চাকরি গেলে কী করতিস?’
মমতা বলেন, ‘সিস্টেম অনুযায়ী সকলে পরীক্ষা দিয়েছে। দু’একটা যদি ভুল ত্রুটি হয়ে থাকে আমরা শুধরে নিতাম।’ অন্যদিকে মধ্যপ্রদেশে শিক্ষা দুর্নীতি ব্যাপক তদন্তের কী হল সেই নিয়েও আজ প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুধু মিথ্যা কথা বলেন। আগামী দিন বিজেপি ক্ষমতায় এলে কারও স্বাধীনতা থাকবে না। এনআরসি করে সবাইকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠাবে। সিএএ করে সবাইকে তাড়িয়ে দেবে। আপনারা কি চান দেশ বিক্রি হয়ে যাক, দেশের সংবিধান ভেঙে যাক, লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ হয়ে যাক, সংখ্যালঘু-তপশিলি-দলিতদের অস্তিত্ব কেড়ে নেওয়া হোক?’
এদিনের সভা থেকে ইন্ডিয়া জোটের কথা উল্লেখ করে কংগ্রেসের ভূমিকার সমালোচনা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘ইন্ডিয়া জোটে আমি আছি, ওই নাম আমিই দিয়েছিলাম। কিন্তু সিপিএম-কংগ্রেসের জোটে নেই। কংগ্রেসকে বলেছিলাম, এখানে তোমাদের দুটো আসন দিচ্ছি। একার ক্ষমতায় লড়ো। কিন্তু শুনল না। মুর্শিদাবাদ, রায়গঞ্জ, মালদায় তৃণমূলের ভোটবাক্সে থাবা বসানোর লক্ষ্যে ওখানে প্রার্থীদের দাঁড় করিয়েছে। লাভ নেই। মনে রাখবেন, তৃণমূল প্রার্থীরা জিতলে আপনাদের জন্য কাজ করবে। ভোট কাটাকাটিতে যাবেন না।’