উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কারাদণ্ড ঘোষণার পরে পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরানকে রাখা হয়েছে পাক পঞ্জাবের অটক জেলে। পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর জন্য জেলে বিশেষ ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পাখা, বিছানা এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হলেও বাতানুকূল যন্ত্র নেই সেখানে।
পাকিস্তান পঞ্জাবের শেষ বড় শহর অটক। শহরটি অবস্থিত গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোড ধরে যাওয়ার পথে সিন্ধু নদীর তীরে। এই অটক শহরে এক এক সময় বন্দি থেকেছেন পাকিস্তানের নামজাদা রাজনীতিকেরা। পাক পঞ্জাবের ৪০টি জেলের মধ্যে অন্যতম এই কারাগার। দুর্নীতির দায়ে এক সময় অটক জেলে বন্দি থাকতে হয়েছে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারিকে। সে দিক থেকে দেখলে ইমরানই দেশের প্রথম কোনও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, যাঁকে অটক জেলে বন্দি রাখা হয়েছে। আজ তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর তরফে অভিযোগ করা হয়েছে, পদ্ধতি মেনে আবেদন করা হলেও অটক জেলের সুপার ইমরানের সঙ্গে তাঁর আইনজীবীদের দেখা করতে দিচ্ছেন না। ফলে উচ্চ আদালতে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নথিতে সই করানো যাচ্ছে না তাঁকে দিয়ে।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিদেশ থেকে পাওয়া নানা উপহার বেআইনি ভাবে বিক্রি করেছেন। তোশাখানার হিসাবে গরমিল সংক্রান্ত মামলায় ইসলামাবাদের এক আদালত তিন বছরের কারাদণ্ড ও ১ লক্ষ টাকা জরিমানার সাজা শোনায় ইমরানকে। তার পরেই গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। অভিযোগ, পঞ্জাব পুলিশ কোনও কোর্ট অর্ডার না-দেখিয়ে স্রেফ বন্দুকের ডগা দিয়ে তাঁকে ‘অপহরণ’ করে অটক জেলে পাঠিয়েছে। নিয়ম মতো সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোও হয়নি।
গ্রেপ্তারির পরে ইমরানের একটি ভিডিয়ো বার্তা সামনে আসে, যা আগেই রেকর্ড করে রেখেছিলেন তিনি। সেই বার্তায় দলের কর্মী-সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেওয়া হয়। তা ছড়িয়ে পড়ে সমাজমাধ্যমে। কিন্তু আজ পাকিস্তানের রাস্তায় খুব বড় কোনও জমায়েত চোখে পড়েনি।
গ্রেপ্তারির আগে সাক্ষাৎকারে ইমরান দাবি করেন, তাঁর বিরুদ্ধে ছ’মাসে ১৮০টি মামলা হয়েছে। সত্তর শতাংশ মানুষের সমর্থন তাঁর সঙ্গে। তাঁকে রুখতে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। ইমরানকে আগামী পাঁচ বছর সক্রিয় রাজনীতি থেকে দূরে থাকার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। চলতি বছরের শেষে পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে।