নাগরাকাটাঃ বোনাসের হার এর থেকেও বহু কম দেখেছে চা বাগান। তবে চুক্তি সম্পাদনে এমন চূড়ান্ত দরকষাকষি শেষ কবে হয়েছে তা স্মরণে নেই বহু প্রবীণ শ্রমিকের। একের পর এক ম্যারাথন আলোচনার শেষে অবশেষে মঙ্গলবার রাতে এবারের চা বোনাসের ফয়সালা হল ১৯ শতাংশে। ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশন (আইটিএ) ও টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার (টাই) সদস্যভুক্ত মোট ১৩৪ টি চা বাগানের জন্য ওই বোনাস রফা হয়। তবে বরাবরের প্রথা মেনে রুগ্নতার নিরিখে কিছু বাগান ওই হারের বোনাস থেকে এবারও ছাড় পাচ্ছে। সেই তালিকা বুধবার আরও একটি বৈঠকের পর চূড়ান্ত হবে বলে জানা গেছে।
আগেকার সিদ্ধান্ত মতোই কলকাতার বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সে অনুষ্ঠিত এদিনের বৈঠকে অংশ নেয়নি চা মালিকদের যৌথ মঞ্চ কনসালটেটিভ কমিটি অফ প্ল্যান্টেশন অ্যাসোসিয়েশনের (সিসিপিএ) অন্য দুই সদস্য সংগঠন টেরাই ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (টিপা) ও ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন। ওই দুটি সংগঠনের আওতাধীন ৬০টির কিছু বেশী বাগানকে নিয়ে আলাদা একটি বৈঠক দু-এক দিনের মধ্যেই ডাকার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। ফলে এই বোনাস রফা যে ডুয়ার্স-তরাইয়ের গোটা চা শিল্পের নিরিখে এখনও পূর্ণাঙ্গ নয় বলাই বাহুল্য।
এবার গোড়া থেকেই ডান-বাম সবকটি শ্রমিক সংগঠন ২০ শতাংশ হারের বোনাসের দাবিতে এককাট্টা ছিল। তৃতীয় বৈঠক ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর চা বলয়ে জোরদার আন্দোলনও শুরু হয়ে যায়। মঙ্গলবারও একাধিক বাগানে গেট মিটিং হয়। গ্রাসমোড় চা বাগানের শ্রমিকরা লাগোয়া ১৭ নম্বর জাতীয় সড়কে মিছিল করেন। ১৯ শতাংশের রফা হলেও চা মহলের সঙ্গে জড়িত অনেকেই বলছেন যে বাগানগুলি ২০ শতাংশ হারেই বোনাস দিতে ইচ্ছুক তাঁরা ইনসেনটিভ হিসেবে বাকী ১ শতাংশ চাইলেই দিতে পারবেন।
চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট ফোরামের অন্যতম শীর্ষ নেতা মণি কুমার দার্ণাল বলেন, সবাই একযোগে এই সিদ্ধান্তে সহমহ পোষণ করেছে। শাসকদল প্রভাবিত তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি বীরেন্দ্র বরা বলেন, এরপর হাতে আর সময় থাকত না। পরিস্থিতির নিরিখে ১৯ শতাংশের বোনাসেই সবাই সন্মতি জানায়। বিজেপির শীর্ষ চা শ্রমিক নেতা ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলার কথায়, আগেও বলেছিলাম ২০ শতাংশের কম বোনাসে আমরা নেই। সেকারনে চুক্তিত্বে কোন স্বাক্ষর করছি না।